খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়িতে ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধানতম ধর্মীয় উৎসব কঠিন চীবর দান উৎসব চলছে।
প্রবারণা পূর্ণিমা শেষে মাসব্যাপী এই ধর্মীয় উৎসব তিন পার্বত্য জেলার প্রতিটি বিহারে উদযাপন করা হয়।
শুক্রবার (০৬ নভেম্বর) খাগড়াছড়ির য়ংড বৌদ্ধ বিহারে কঠিন চীবর দান উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এতে ধর্মীয় গুরুরা বৌদ্ধ ধর্মের অনুশাসন মেনে পাহাড়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান।
এ সময় ধর্ম দেশনা দেন চট্টগ্রামের গহিরার অঙ্কুরগুনা বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ সত্যপাল মহাস্থবির। এতে চোংড়াছড়ি বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ উইঞানা মহাস্থবির, য়ংড বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ উগ্র বিংশ মহাস্থবিরসহ অন্যান্য ভিক্ষুরা অংশ নেন।
মহা উপাসিকা বিশাখা কর্তৃক প্রবর্তিত চীবর দানই হলো কঠিন চীবর দান উৎসবের প্রধান আকর্ষণ। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা তৈরি ও সেই সুতায় চীবর তৈরি করা হয়ে থাকে।
প্রথমে চরকার মাধ্যমে তুলা থেকে সুতা তৈরি করে সুতা বিভিন্ন রংয়ে রাঙিয়ে তৈরি করা করা হয় চীবর বা কাপড়। পরদিন বিকেলে এ চীবর দায়ক-দায়িকারা উৎসর্গ (দান) করেন ভান্তেদের উদ্দেশে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মতে এই দানে পূণ্যলাভ হয়।
এদিকে, চীবর দান উৎসবে অন্যান্য বছরের মতো এবারো বিহার প্রাঙ্গণে উষা বন্দনা, সংঘদান, অষ্ট পরিষ্কার দান, পঞ্চশীল প্রার্থনা, প্রদীপ পূজা প্রভৃতি ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালিত হয়েছে।
এছাড়া ভান্তে কর্তৃক প্রবজ্জা গ্রহণ, পরজন্মে জ্ঞানলাভের উদ্দেশে পিদিমা বা কল্পতরুতে দান করেন ধর্মপ্রাণ মানুষ। শুক্রবার সন্ধ্যায় হাজার বাতি প্রজ্জ্বলন ও ফানুস ওড়ানোর মাধ্যমে শেষ হবে এ অনুষ্ঠান।
অপরদিকে, পাহাড়ি অঞ্চলে বৌদ্ধ বিহারগুলোতে এ উৎসবকে ঘিরে মানুষের মিলনমেলা বসেছে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ও পাহাড়িরা ছাড়াও উৎসবে এসেছেন বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের মানুষ।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৬, ২০১৫
এসআর