কিশোরগঞ্জ: ছয় মাস হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে ধান জন্মাই, কিন্তু ধানের দর নাই। এজন্য হালচাষের মহিষ কিনতে পারছি না।
এসব কথা বলছিলেন কিশোরগঞ্জ হাওরবেষ্টিত মিঠামইন উপজেলা ঘাগড়া ইউনিয়নের মালিউন গ্রামের আব্দুল মালেক।
শুধু আব্দুল মালেক নয় মহিষের দাম বেশি হওয়ার কারণে মহিষ না ক্রয় করে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন অনেক ক্রেতা। এ দৃশ্য দেখা গেছে কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর উপজেলার সরারচর ইউনিয়নের সরারচর বাজারের বিশাল মহিষের হাটে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মহিষ ও গরুর হাট হিসেবে পরিচিত প্রায় ১৫০ বছরের জেলার বাজিতপুর উপজেলার সরারচর বাজার। এখানে প্রতি সপ্তাহের শনিবার জমে মহিষ ও গরুর বিশাল হাট।
এ বাজারে বর্তমানে গরুর চেয়ে মহিষের চাহিদা বেশি। তাই বাজারের বেশিরভাগ অংশ দখল করে রেখেছে কালো রঙের শিংওয়ালা বড় বড় মহিষ। এ মহিষ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আনা হয় সরারচর বাজারে। বর্তমানে রাজশাহী বিভাগের স্মৃতিরহাটের মহিষের কদর সবচেয়ে বেশি কিশোরগঞ্জের এ হাটে।
উপজেলার হিলচিয়া ইউনিয়নের দেউকান্দি গ্রামের সরারচর বাজারে মহিষ বিক্রেতা আসাদ মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, স্মৃতির হাট থেকে সাতটি মহিষ এনে আমি এ বাজারে বিক্রি করেছি। স্মৃতির হাটে মহিষের দাম কম হওয়াতে এ বাজারে বিক্রি করে অনেক লাভ করেছি।
আরেক মহিষ বিক্রেতা আবু মিছির বলেন, রাজশাহীর স্মৃতির হাট থেকে আমি ১৪টি মহিষ এনেছি। সরারচর বাজারে তিনটি বিক্রি করেছি। বাকি ১১টি মহিষ বিক্রি করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাইশমোজা বাজারে নিয়ে যাব। সেখানে মঙ্গলবারে মহিষের হাট বসে।
সরারচর বাজার সমিতির সভাপতি সাইদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বাপ-দাদার কাছে থেকে শুনে এসেছি বৃহত্তর ময়মনসিংহের মধ্যে প্রথম গরু-মহিষের হাট শুরু হয় সরারচর বাজারে। ঈদ ছাড়াও প্রতি বছরের আশ্বিন মাস থেকে অগ্রহায়ণ মাস পর্যন্ত মহিষের চাহিদা বেশি থাকে।
সরারচর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু নাছের সবুজ বাংলানিউজকে বলেন, গরু-মহিষের বিশাল হাট হিসেবে বিখ্যাত এ বাজারে বৃষ্টির দিনে কাদায় পরিপূর্ণ হয়ে পড়ে। তাই কর্তৃপক্ষ বাজার রক্ষার্থে ড্রেন নিষ্কাশন ও স্থায়ী পাকার ব্যবস্থা করছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৫
এমজেড