লালমনিরহাট: ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়া সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীর নিজ দেশে ফেরা আবারও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
সোমবার (৯ নভেম্বর) লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থরবন্দর দিয়ে প্রথম দলের ভারতে যাওয়ার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না।
জানা গেছে, চলতি বছরের ৩১ জুলাই মধ্যরাতে দীর্ঘ ৬৮ বছরের বন্দি জীবন থেকে মুক্তি মিলে ভারত-বাংলাদেশের ১৬২টি ছিটমহলের কয়েক হাজার মানুষের। এরপর উভয় দেশে সরকারিভাবে যৌথ জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এ জরিপের মাধ্যমে ছিটবাসী নিজেদের ইচ্ছামতো নাগরিকত্বের আবেদন করেন।
জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ১১১টি ছিটমহলের মধ্যে ৯৭৯ জন ভারতের নাগরিকত্ব নিতে আবেদন করেন। অপরদিকে, ভারত থেকে কেউ বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেননি।
ভারতে নাগরিকত্বের আবেদনকারীদের মধ্যে ট্রাভেল পাস ইস্যু করে ভারত সরকার। সে অনুযায়ী, ট্রাভেল পাসপ্রাপ্তদের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ভারত পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয় উভয় দেশের ডিসি-ডিএম পর্যায়ের যৌথ সভায়।
লালমনিরহাট জেলার তিনটি উপজেলার সদ্য বিলুপ্ত ৫৯টি ছিটমহলের ৩৯টি পরিবারের ১৯৫ জন ভারতের ট্রাভেল পাস পান। তাদের যোগাযোগের সুবিধার জন্য কয়েকটি দলে বিভক্ত করে ভারতে যাওয়ার দিনক্ষণ ঠিক করা হয়। সে অনুযায়ী, সরকারের পক্ষ থেকে তাদের পুরোপুরি প্রস্তুতি নিতে বলা হয়।
১ নভেম্বর তাদের মধ্যে প্রথম দলটির পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দর হয়ে ভারতে যাওয়ার কথা থাকলেও ভারত সরকারের প্রস্তুতি না থাকায় তা পরিবর্তন করে ৫ নভেম্বর করা হয়। সেটিও একই কারণে পরিবর্তন করে ৯ নভেম্বর সম্ভাব্য দিন ধার্য করা হয়। কিন্তু এবারও একই কারণে তাদের ভারতে যাওয়া পেছালো।
এদিকে, সব সম্পত্তি বিক্রি করে ভারত যেতে পুরোদমে প্রস্তুতি নিয়েও বারবার দিনক্ষণ পরিবর্তন হওয়ায় ট্রাভেল পাসধারীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।
ভারত গমনেচ্ছুরা পুরোপুরি প্রস্তুতি নিলেও ভারত সরকারের সবুজ সংকেত না পওয়ায় আবারও থমকে গেলো ট্রাভেল পাসধারীদের ভারত যাওয়া। তবে ৯ নভেম্বরের পরিবর্তে এখনও পর্যন্ত কোনো তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
অপরদিকে, ২৬ নভেম্বর দ্বিতীয় দলটির ভারতে যাওয়ার কথা রয়েছে। পরিবহন সমস্যার কারণে সব দল একদিনে নেওয়ার সুযোগ নেই বলেও জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে জেলা প্রশাসনের দাবি, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সবাইকে ভারতে পাঠানো হবে।
পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুর কুতুব উল আলম বাংলানিউজকে জানান, বাংলাদেশ সরকার ও ট্রাভেল পাসধারীরা পুরোপুরি প্রস্তুত। কিন্তু ভারত সরকারের সবুজ সংকেত না আসায় ট্রাভেল পাসধারীদের পাঠানো হচ্ছে না।
প্রথম দলটি কবে যাচ্ছে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি তিনি।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, ট্রাভেল পাসধারীরা প্রস্তুত রয়েছেন। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে সবুজ সংকেত এলেই তাদের পাঠানো হবে। তবে ৩০ নভেম্বরের মধ্যেই সবাইকে পাঠানো হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১০২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৫
এসআই