ঢাকা: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় সরকার ঋণ নেবে, ঋণ নিয়ে কাজ করতে সরকারের কোনো অসুবিধা নেই- অর্থমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সোমবার (০৯ নভেম্বর) টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এক বিবৃতিতে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে যখন অপরাপর দেশের সঙ্গে বাংলাদেশ আসন্ন প্যারিস চুক্তিতে আইনি বাধ্যতার আওতায় ‘দূষণকারী কর্তৃক ক্ষতিপূরণ’ নীতি মেনে ঋণের পরিবর্তে উন্নয়ন সহায়তার ‘অতিরিক্ত’ ও ‘নতুন’ শুধুমাত্র অনুদানকে স্বীকৃতি দিয়ে জলবায়ু অর্থায়নের সর্বসম্মত সংজ্ঞা নির্ধারণের দাবি উত্থাপন করতে যাচ্ছে ঠিক তখনই, সরকারের এ অবস্থান ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তির পথে অন্তরায় হিসেবে কাজ করবে।
তিনি বলেন, টিআইবি উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে, জিসিএফ (সবুজ জলবায়ু তহবিল) থেকে অর্থায়নের অন্যতম উৎস হিসাবে ঋণ প্রদান এবং জিসিএফ’র অর্থায়ন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অর্থ লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানকেও অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে জলবায়ু তহবিলের নামে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে জিসিএফ থেকে ঋণ গ্রহণে সুকৌশলে উদ্বুদ্ধ, এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাধ্য করার প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হচ্ছে।
ড. জামান আরো বলেন, জলবায়ু তহবিলকে লাভজনক বিনিয়োগ বা ব্যবসা হিসাবে ব্যবহার করা অনৈতিকভাবে প্রতিশ্রুতির লংঘন। আসন্ন প্যারিস সম্মেলনের প্রাক্কালে অর্থমন্ত্রীর এ ধরনের বক্তব্য প্যারিস চুক্তির আলোচনায় বাংলাদেশের মতো ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর ক্ষতিপূরণ পাওয়ার নৈতিক ভিত্তিকে দুর্বল করবে।
আসন্ন প্যারিস বৈঠকে ‘দূষণকারী দেশ কর্তৃক ক্ষতিপূরণ’ নীতি অবলম্বন করে ঋণের পরিবর্তে উন্নয়ন সহায়তার ‘অতিরিক্ত’ ও ‘নতুন’ অনুদানকে অন্তর্ভুক্ত করে জলবায়ু অর্থায়নের সর্বসম্মত সংজ্ঞা নির্ধারণ, শিল্পোন্নত দেশগুলোকে ২০১৬ থেকে ২০৩০ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে প্রতিশ্রুত জলবায়ু অর্থায়নের পথনকশা (রোডম্যাপ) নির্ধারণ ও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিল ব্যবস্থাপনার সব পর্যায়ে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও নাগরিক অংশগ্রহণ নিশ্চিতের জোর দাবি জানায় টিআইবি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৫
এডিএ/জেডএস