ঢাকা: বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শ্রীশ্রী শ্যামাপূজা (কালীপূজা)। দেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা প্রতি বছরের মতো এবারও বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) শ্যামাপূজা উদযাপন করবেন।
সোমবার (০৯ নভেম্বর) থেকেই শুরু হয়েছে পূজার প্রস্তুতি। বিকেলে আয়োজকরা প্রতিমাসহ পূজার নানা উপকরণ সংগ্রহ করেন পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজার, শ্যামবাজার, তাঁতীবাজার, বাংলাবাজার থেকে।
অধিকাংশ পূজামণ্ডপেই প্রতিমা সংগ্রহ সম্পন্ন হয়েছে।
ঢাকা মহানগরীর সবুজবাগ থানার বাসাবোর (কদমতলা-রাজারবাগ) মোঘল সম্রাট আকবরের প্রধান সেনাপতি রাজা মানসিংহের স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক মন্দির শ্রীশ্রী বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দিরে মঙ্গল ও বুধবার (১০ ও ১১ নভেম্বর) যথাযোগ্য মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে দু’দিনের শ্রীশ্রী শ্যামাপূজা (শ্রীশ্রী বরদেশ্বরী কালীমাতা পূজা) ও দীপান্বিতা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
এ উপলক্ষে মঙ্গলবার রাত ৭টা ৩১ মিনিটে ‘ধর্ম: এক স্রোতস্বিনী এবং শক্তিপূজার মাধ্যমে অশুভ শক্তি ও অসুর বিনাশ করতে হবে’ শীর্ষক ধর্মীয় আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি।
বিশেষ অতিথি থাকবেন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্য উজ্জ্বল বিকাশ দত্ত, সাবেক সিনিয়র সচিব- লেখক- গবেষক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রঞ্জিত কুমার বিশ্বাস।
আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক প্রিয়তোষ সাহা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ কমিটির সহ সম্পাদক এমএ করিম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন শ্রীশ্রী বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দিরের সভাপতি লায়ন চিত্ত রঞ্জন দাস।
এর আগে সন্ধ্যা ৫টা ৫৫ মিনিটে মন্দির সংলগ্ন গঙ্গাসাগর দিঘিরপাড়ে সহস্রাধিক প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করা হবে।
অন্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে রাত ৭টা ০১ মিনিটে ফানুস উড্ডয়ন ও আতশবাজির প্রদর্শনী, রাত ১০টায় ভক্তিমূলক গান, রাত ১২টা ০১ মিনিটে শ্রীশ্রী বরদেশ্বরী কালীমাতার পূজা আরম্ভ, রাত ১টায় পুস্পাঞ্জলি প্রদান, পাঠা বলিদান, ভোর ৩টা ০১ মিনিটে মহাপ্রসাদ বিতরণ।
এছাড়া বুধবার সন্ধ্যা ৬.০১ মিনিটে আলোকসজ্জা প্রদর্শনী ও রাত ৯টা ৫২ মিনিটে অমাবশ্যা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। রাত ১১টা ০১ মিনিটে রয়েছে লায়ন চিত্ত রঞ্জন দাস নির্দেশিত নাটক ‘ঢাকার অসুখ-ডাক্তার চাই’।
মঙ্গলবার রাত ৯টায় ৮৪নং বনগ্রাম রোড রাধাগোবিন্দ জিঁউ ঠাকুর মন্দির কমিটির উদ্যোগে (পুরাতন লোহার মার্কেট সংলগ্ন) কালীপূজার আয়োজন করা হয়েছে। উৎসবে হিন্দু সম্প্রদায় ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থাকবেন।
এছাড়াও রাজধানী ঢাকার রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন, ঢাকেশ্বরী মন্দির, রমনা কালীমন্দির, সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির, পোস্তগোলা মহাশ্মশান, বনগ্রাম তরুণ সংসদ, সূত্রাপুর গৌতম মন্দির, বিহারী লাল জিঁউ মন্দির, রামসীতা মন্দির, ঠাঁটারিবাজার শিব মন্দির, তাঁতীবাজার, শাখারিবাজার, বাংলাবাজার, শ্যামবাজার, লালবাগ, ধানমণ্ডিসহ বিভিন্ন মন্দিরে কালীপূজার আয়োজন করা হয়েছে।
কালীপূজায় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা তাদের প্রয়াত পিতা-মাতাসহ আত্মীয়-স্বজনদের আত্মার শান্তি কামনা করে সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করবেন, যা দীপাবলী হিসেবে খ্যাত।
বাংলাদেশ সময়: ০১৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০১৫
এসএস/এএসআর