ঢাকা, বুধবার, ১৬ আশ্বিন ১৪৩২, ০১ অক্টোবর ২০২৫, ০৮ রবিউস সানি ১৪৪৭

জাতীয়

শীতের রাতে ফুটপাতে নির্ঘুম কাটছে অনেকের রাত

মোস্তফা ইমরুল কায়েস, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭:২৬, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৫
শীতের রাতে ফুটপাতে নির্ঘুম কাটছে অনেকের রাত ছবি: শাকিল / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: মায়ের পাশে ঘুমের দেশে শিশুটি। চোখে মুখে পবিত্রতার আভা।

বয়স মাত্র আট মাস। গল্পটা এ পর্যন্ত এসে থেমে গেলেই হয়তো ভালো ছিল। কিন্তু বাস্তবতা সবসময়ই কল্পনার বিপরীতে চলে। আর সে কারণেই হয়তো পৃথিবীর কিছু বুঝে ওঠার আগেই শিশুটির রাত কাটতে শুরু করেছে খোলা আকাশের নিচে ফুটপাতে।

সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) রাত ২টার দিকে রাজধানীর ফার্মগেটে খামারবাড়ী এলাকায় গিয়ে এমন দৃশ্যই চোখে পড়ল। তীব্র শীতে ঘুমের মাঝেই কেঁপে কেঁপে উঠছে শিশুটি। গায়ে মাত্র একটা পাতলা কাঁথা। তাই দিয়েই মা-সন্তানের শীত নিবারণের অবিরাম চেষ্টা।

শুধু এই মা-সন্তানই নন, এভাবেই এই গায়ে কাঁটা দেওয়া ঠাণ্ডায় ফুটপাতে রাত কাটছে আরও অনেক মানুষের। পরনের কাপড়ই এই ছিন্নমূলদের অনেকের শীত কাটানোর একমাত্র উপায়। হিমেল হাওয়ার কাঁটা সইতে না পেরে অনেকের কাটছে নির্ঘুম রাত।

অমিরন বিবি। বয়স সত্তর ছুঁইছুঁই। রাজধানীর ফুটপাতেই কেটে গেছে তার জীবনের বিশটি বছর। প্রতিবার শীতে কেউ না কেউ পুরনো কাপড় দান করলেও এবার কিছু জোটেনি। ফলে একটি পাতলা ওড়নাই তার শীত কাটানোর উপায়। মনে কষ্ট নিয়ে বললেন, চাইয়া খাই। কার কাছে কমু একটা কম্বল দেন। কয়েকদিন ধইরা রাইতে ঘুমাইতে পারি না। সারা রাইতই জাইগা থাকি।

বিধবা রেনু বেগম বাংলানউজকে বললেন, এবার কেউ একটা ত্যানাও (কাপড়ের অংশ) দেয় নাই। আগেরবার গাজীপুরের বোর্ডবাজারে একজন একটা চাদর দিছিলো। সেইডাই রাইতে লইয়া ঘুমাই।

গেল বছর একজনের কাছ থেকে একটি চাদর পেয়েছিলেন হাসনা বানুও (৬৫)। সেটা অবশ্য পরে দিয়ে দিয়েছিলেন ভাইয়ের মেয়েকে। ফলে এখন গায়ে প্লাস্টিক জড়িয়ে রাত কাটছে তার।

রেজিয়া বেগম (৫৫) বললেন, একখান চাদর গতবার কলেজের ছাত্ররা দিয়া গেছিলো। সেইডা নিয়াই ঘুমাই।

সবাই জানালেন, এবার এখন পর্যন্ত কোনো স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বা ব্যক্তি শীতের কাপড় দিতে আসেননি। ফলে বেশ কষ্টেই কাটছে তাদের সবার রাত।

বাংলাদেশ সময়: ০৭২৫ ঘন্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৫
এমআইকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।