ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

চার ঘণ্টার হাট

সালাহ উদ্দিন জসিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৫
চার ঘণ্টার হাট ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: গ্রামে সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে হাট বসে আর নগরে বসে প্রতিদিনের বাজার। সঙ্গে অলি-গলিতে ফেরিওয়ালা, দোকান-পাট আর অস্থায়ী বাজার তো আছেই।

এছাড়াও আছে অনলাইন শপ, মেগাশপসহ নানা ধরনের আধুনিক বাজার।

এমন যখন অবস্থা, তখন রাজধানীর পুরান ঢাকায় ছুটির দিনে বসছে চার ঘণ্টার হাট। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতাল সংলগ্ন ব্যস্ত সড়কে শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত বসে এই হাট।

চার ঘণ্টার এ হাটে নারীদের সাজের জন্য সিটি গোল্ড ও পাথরের বিভিন্ন অলঙ্কার, কসমেটিকস সামগ্রী, সিরামিকসের সামগ্রী, প্লাস্টিকের আসবাবপত্র, শীতের কাপড় ও জুতাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় অনেক কিছুই পাওয়া যায়।

সপ্তাহের একদিনের এ বাজারের বেশিরভাগ পণ্যই চকবাজার থেকে আনা হয়। স্বাভাবিক বাজারের তুলনায় দাম অনেক কম হওয়ায় এখানে ক্রেতার চাপ অনেক। বিক্রিও হয় বেশ ভালো। বেশিরভাগ পণ্যই পাইকারি বিক্রি হয়।

চার ঘণ্টার এ বাজারে ক্রেতারাই শুধু পার্টটাইমার নন, বিক্রেতারাও। অধিকাংশ বিক্রেতা ভিন্ন চাকরি করেন, পার্টটাইম জবের মতো শুক্রবারে এখানে ব্যবসা করেন।

বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের কম্পিউটার অপারেটর। শুক্রবারে এখানে চিরুনি, ব্রাশ, নেইল কাটারসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি করেন তিনি। চার ঘণ্টায় ১৬০০ টাকা থেকে ১৮০০ টাকা বিক্রি করেন। এতে তার ৪০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা লাভ থাকে।

সোহাগ আসে চাঁদনিঘাট থেকে। স্থানীয় রহমত স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী সে। প্রতি শুক্রবার এ বাজারে মেয়েদের সিটি গোল্ড ও পাথরের তৈরি গহনা বিক্রি করে। পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা বিক্রি হয়। এর মধ্যে এক হাজার টাকার মতো লাভ হয় সোহাগের।

দু’জনেই সন্তোষ প্রকাশ করে বাংলানিউজকে বলেন, বেশ ভালোই বেচা-কেনা হয়। খুব কম সময়ের মধ্যে ব্যবসা করে ভালোই আয় করি। অন্যসব বিক্রেতারাও বেশ সন্তুষ্ট। একই সঙ্গে তুষ্ট ক্রেতারাও।

জেসমিন নামে এক ক্রেতা বলেন, এখানে দাম কম, তাই প্রতি শুক্রবারে চলে আসি। টুকিটাকি জিনিসগুলো কিনে নেই।

তিনি বলেন, বোরকায় ব্যবহারের সেফটিপিন বাইরের দোকানে প্রতি পিস পাঁচ টাকা। আর এখান থেকে এক পাতা কিনি। প্রতি পিস এক টাকার মতো পড়ে। এভাবে সব জিনিসই এখানে অনেক কম দামে পাওয়া যায়।

রায়সাহেব বাজারের সালাম বলেন, আমার কসমেটিকসের দোকান আছে। চকবাজার থেকে পাইকারি দামে কেনাকাটা করি। সেখানে যে দামে পাই এখানে তার চেয়েও কম দামে পাওয়া যায়। এজন্য কিছু জিনিস এখান থেকেও নিয়ে বিক্রি করি।

ব্যস্ততম এ এলাকায় হঠাৎ গড়ে ওঠা এ বাজারের কারণে কোনো সমস্যা হয় কি-না, জানতে চাইলে সালমান নামে এক মেডিসিন ব্যবসায়ী বলেন, শুক্রবারে এখানকার সব মার্কেট বন্ধ। শুক্রবার ছাড়া এখানে দাঁড়িয়ে থাকারও সুযোগ নেই। শুক্রবারে সব মার্কেট বন্ধ থাকায় মার্কেটের সামনে তারা বসতে পারছেন।

তিনি বলেন, বিক্রেতারা পরিচিত বলে কেউ কিছু বলেন না। তাদের অধিকাংশই আশপাশের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী। ছুটির দিনে ব্যবসা করে অতিরিক্ত কিছু কামাই হয় তাদের।  

বাংলাদেশ সময়: ০০৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৫
এসইউজে/এমজেএফ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।