লক্ষ্মীপুর: শীতে লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়ছে। অসময়ে ইলিশ ধরা পড়ায় রাত-দিন জেলেরা ব্যস্ত মাছ শিকারে।
প্রতি বছর জ্যৈষ্ঠ মাসে প্রথম ইলিশের দেখা মেলে। আষাঢ়ের বৃষ্টিতে সাগর থেকে ঝাঁকে-ঝাঁকে ইলিশ আসে। বর্ষা মৌসুম ইলিশের ভরা মৌসুম। তবে গেলো ইলিশের ভরা মৌসুমে জেলেদের জালে তেমন ইলিশ ধরা পড়েনি। নদী থেকে তাদের খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। কিন্তু এ পৌষ মাসে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ইলিশ। এতে বেশ খুশি তারা।
আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে স্থানীয় জেলেরা দিন-রাত খাটুনি খেটেও দাদনদার-মহাজনদের দেনা শোধ করতে পারেনি। ঋণ-দাদনে দিশেহারা হয়ে পড়ে জেলেরা। এখন শীত মৌসুমে মাছ ধরা পড়ায় চিত্র পাল্টেছে। জেলেদের চোখে-মুখে এখন হাসি।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ইলিশের সরবরাহ বেশ ভালো। দামও নাগালের মধ্যে। ৫০০ গ্রাম ওজনের দু’টি ইলিশ (এক কেজি) ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মৌসুমে চড়া দামে ইলিশ কিনতে না পারলেও এখন দাম কম হওয়ায় ইলিশের স্বাদ নেওয়া যাচ্ছে।
কমলনগরের চর কালকিনি এলাকার জেলে ওহিদ মাঝি বাংলানিউজকে বলেন, বর্ষায় মাছ পাইনি। এরপর মা ইলিশ রক্ষায় নদীতে মাছ শিকারে যাইনি। মহাজনের চাপ আর ধার-দেনায় কষ্টে যাচ্ছিলো দিনগুলো। গত ৭/৮ দিন ধরে জালে প্রচুর মাছ ধরা পড়ছে। এভাবে আরও কিছুদিন ইলিশ ধরা পড়লে ধার-দেনা কমাতে পারবো। দিনগুলোও ভালো কাটবে। একই কথা জানালেন জেলে আবু সিদ্দিক ও নুরুল ইসলাম।
চর কটরিয়া মাছঘাটের ব্যবসায়ী কাউছার বাংলানিউজকে বলেন, মাছ ধরা পড়ায় প্রতিদিন একটি ছোট নৌকা ৬ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করতে পারছে।
পাইকারী ব্যবসায়ী আবদুজ জাহের বলেন, প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। ইলিশের মৌসুমেও এমন ইলিশ দেখা যায়নি। মোকামেও (ঢাকায়) অনেক মাছ দিতে পারছি। লাভও ভালো।
রামগতি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা খোরশেদ আলম বাংলানিউজকে বলেন, শীতকাল ইলিশের প্রধান মৌসুম না হলেও অতীতে কিছু ইলিশ ধরা পড়তো। কিন্তু এবার শীত মৌসুমে রামগতি, কমলনগর ও রায়পুরের মেঘনা নদীতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষা করতে পারায় এখন জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়ছে।
জাটকা নিধন রোধ, কারেন্ট জালের ব্যবহার ও ইলিশ রক্ষায় নদীতে নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ড ও মৎস্য বিভাগের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান মৎস্য কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৫
এমজেড