ঢাকা: অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীদের অংশগ্রহণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে যেসব নারীর শিশু সন্তান রয়েছে, তাদের পক্ষে ঘরের বাইরে গিয়ে কাজ করা দূরহ হয়ে পড়ে।
৬ মাস থেকে ৬ বছর বয়সী শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক দিবাযত্ন কেন্দ্র নেই বাংলাদেশে। এসব না থাকায় কর্মজীবী মায়েদের কর্মক্ষমতা অধিকাংশ সময় কমে যাচ্ছে। শিশুকে বাসায় রেখে কর্মক্ষেত্রেও মায়ের মন পড়ে থাকে শিশুর প্রতি। বাসায় ছোট শিশুকে ফেলে এসে কাজেও মন বসে না মায়েদের।
এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিটি জেলায় একটি করে দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে করে শিশুদের নিয়ে চিন্তামুক্ত হতে যাচ্ছেন কর্মজীবী মায়েরা। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মহিলা বিষয়ক অধিদফতর এ দিবাযত্ন কেন্দ্র নির্মাণ করবে।
মহিলা বিষয়ক অধিদফতর সূত্র জানায়, রাজস্ব বাজেটের আওতায় ৩২টি এবং উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ১১টিসহ মোট ৪৩টি দিবাযত্ন কেন্দ্র চলমান আছে। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জে পর্যাপ্ত এবং প্রতিটি জেলায় একটি করে আরও ২০টি দিবাযত্ন কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। ৫৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৬ থেকে ২০২০ মেয়াদে দিবাযত্ন কেন্দ্রগুলো নির্মাণ করা হবে। পর্যায়ক্রমে সব জেলায় হবে দিবাযত্ন কেন্দ্র।
এখানে শিশুদের রাখতে শিশুপ্রতি নিম্ন আয়ের মায়েদের ৩০ টাকা এবং মধ্যম আয়ের মায়েদের ৩০০ টাকা করে সার্ভিস চার্জ দিতে হবে।
মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের পরিচালক(যুগ্ম সচিব) এ বি এম জাকির হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন, এখন বিভিন্ন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মায়েরা সম্পৃক্ত হচ্ছেন। কিন্তু বাসায় বাচ্চাকে রেখে এসে কর্মক্ষেত্রে তারা কাজে মনোযোগ দিতে পারেন না। সেজন্য আমরা দেশব্যাপী ক্রমান্বয়ে দিবাযত্ন কেন্দ্র নির্মাণ করবো। নিম্ন আয়ের মায়েদের ৩০ টাকা এবং মধ্যম আয়ের মায়েদের ৩০০ টাকা করে দিতে হবে। বিনিময়ে অফিস চলাকালে শিক্ষা, সুষম খাদ্য, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও প্রি-প্রাথমিক শিক্ষা দেবো। আমাদের নিজস্ব শিক্ষকের মাধ্যমে শিক্ষা দেবো। এতে করে কর্মক্ষেত্রে মায়েদের বাচ্চাদের নিয়ে আর ভাবতে হবে না। বাচ্চারা দিবাযত্নে খেলাধুলাসহ পড়ালেখা করবে। মায়েরা অফিস শেষ করে তাদের নিয়ে যাবে।
এর মাধ্যমে নিম্ন-মধ্যম আয়ের কর্মজীবী মায়েরা কর্মক্ষেত্রে মনোযোগ সহকারে যেন যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে পারেন, সেজন্য তাদের ৩ থেকে ৬ বছর বয়সী শিশুদের নিরাপদ দিবাকালীন সেবা দেওয়া হবে।
মহিলা বিষয়ক অধিদফতর সূত্র জানায়, সুষম খাদ্য, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, প্রি-প্রাথমিক শিক্ষা, অভ্যন্তরীণ খেলাধুলা ও বিনোদন সুবিধার মাধ্যমে শিশুদের শারীরিক, সামাজিক ও মানসিক বৃদ্ধির নিশ্চয়তা দেওয়া হবে।
এর পাশাপাশি দিবাযত্নের জন্য আসবাবপত্র, বিছানা, ক্রোকারিজ, খেলাধলু সামগ্রী, শিক্ষা সামগ্রী, টয়লেট্রিজ ও ঔষধ কেনা হবে।
নতুন করে আরও ২০টি দিবাযত্ন নির্মাণ করা হলে অনেক জেলায় গড়ে উঠবে দিবাযত্ন কেন্দ্র।
ঢাকা জেলার ধানমণ্ডি, মতিঝিল, রামপুরা, রায়েরবাজার, কমলাপুর, মুগদা, মহাখালী, আশুলিয়া, সায়েদাবাদ ও পল্লবীতে দিবাযত্ন কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে।
অন্যদিকে গোপালগঞ্জ, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, রংপুর, নওগাঁ, গাইবান্ধা, ভোলা, কক্সবাজার, নোয়াখালী ও চাঁদপুর সদরেও গড়ে উঠবে আধুনিক দিবাযত্ন কেন্দ্র।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৩৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৫
এমআইএস/এএসআর