ঢাকা: সৌদি আরব সফর দিয়েই নতুন বছর শুরু করতে যাচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতির জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ একটি সফর বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৫ জানুয়ারি সৌদি আরব যাচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। চারদিনের এ সফর শেষ হবে আগামী ৮ জানুয়ারি।
মন্ত্রীর এ সফরেই সদ্য যোগ দেওয়া সৌদি নেতৃত্বাধীন ৩৪ রাষ্ট্রের সন্ত্রাসবিরোধী সামরিক জোটের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাবে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর নেতা সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক আরো জোরদারও এ সফরের মূল উদ্দেশ্য। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্রটি জানিয়েছে, সফরে সদ্য গঠিত সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন ৩৪ রাষ্ট্রের সন্ত্রাসবিরোধী সামরিক জোটের কার্যক্রম কি হবে, আর সেখানে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ভূমিকা কতটুকু হবে, তা নিয়ে বিস্তারিত ধারণা নেবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এর বাইরে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর পাশাপাশি সম্পর্ক আরো এগিয়ে নিতে অন্যান্য ইসুতেও আলোচনা করবেন তিনি।
মুসলিম দেশগুলোর নেতা হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত সৌদি আরব। তারই ধারাবাহিকতায় ইয়েমেনে সরকার বিরোধীদের সঙ্গে দেশটির লড়াইয়ে, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য পদে যোগ দিতে উত্সাহ ও সদ্য গঠিত সৌদি নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসবিরোধী সামরিক জোটের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে সমর্থন জানিয়েছে বাংলাদেশ। তবে এ জোটের কার্যক্রম ও বাংলাদেশের ভূমিকা নিয়ে এক ধরনের অস্পষ্টতা রয়ে গেছে।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বাংলানিউজকে বলেন, প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ সন্ত্রাসবিরোধী সামরিক জোটে থাকার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। তবে এ বিষয়ে যে অস্পষ্টতা বা বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে, তা জোটের বৈঠকের পর কেটে যাবে। সৌদি আরব থেকে প্রাপ্ত প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতেই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সরকার নিজের অবস্থান ব্যক্ত করেছে। সেন্টারটি তৈরি হওয়ার ঘোষণা এসেছে মাত্র। এখনও অনেক কাজ বাকি। প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠকও হয়নি। ওই বৈঠকটি হয়ে যাওয়ার পর সবকিছু স্পষ্ট হবে।
এর আগে ২০১৩ সালের শুরুতে সৌদি আরবকে ২০১৪-১৫ সালের জন্য নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য পদে যোগ দিতে উৎসাহিত করেছিল বাংলাদেশ। যদিও অস্থায়ী সদস্য নির্বাচিত হলেও নিরাপত্তা পরিষদ সংস্কারের দাবিতে ওই পদে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানায় দেশটির সরকার। এ বছর শিয়াপন্থি বিদ্রোহীদের দমনে সৌদি নেতৃত্বে সুন্নি প্রধান কয়েকটি দেশ ইয়েমেনে সামরিক অভিযান পরিচালনা করে। এ অভিযান এখনও অব্যাহত রয়েছে। এতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের একাধিক অভিযোগ উঠলেও বিষয়টিতে মুখ খোলেনি বাংলাদেশ। বরং ইয়েমেনে সরকার বিরোধী হুথি বিদ্রোহীদের কঠোর সমালোচনা করেছে বাংলাদেশ সরকার। সেই সঙ্গে বিদ্রোহীদের দমনে সৌদির অভিযানেও নৈতিক সমর্থন জানিয়েছে। এসব বিষয়ে সৌদি আরবকে ‘অন্ধ সমর্থনের’ সমালোচনাও রয়েছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে।
বাংলাদেশ সময়: ০৫১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৫
জেপি/আরএইচ