ঢাকা, শনিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রাজউকের প্লট ফেরত দিতে হলো নুরুল হুদার স্ত্রীকে

আদিত্য আরাফাত, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৫
রাজউকের প্লট ফেরত দিতে হলো নুরুল হুদার স্ত্রীকে প্রকৌশলী নুরুল হুদা

ঢাকা: দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলা থেকে রক্ষা পেতে অবৈধভাবে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ  (রাজউক) থেকে নেওয়া ৫ কাঠার প্লট ফেরত দিলেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল হুদার স্ত্রী ওয়াহিদা হুদা।

রাজউককে দেওয়া এক আবেদনে হুদার স্ত্রী ওয়াহিদা উল্লেখ করেন, 'আমার স্বামীকে যাতে বিব্রতকর পরিস্থিতির সন্মুখীন হতে না হয়, সেজন্য প্লটটি রাজউক বরাবর ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

'

সম্প্রতি রাজউক কর্তৃপক্ষ পূর্বাচলে ওয়াহিদা হুদার প্লট 'বুঝে পেয়েছেন' বলে দুদককে জানিয়েছেন। রাজউক থেকে দুদকে পাঠানো এসব নথিপত্রের অনুলিপি বাংলানিউজের কাছে রয়েছে।

নথিপত্রে দেখা যায়, চলতি মাসের ৬ ডিসেম্বর মিসেস ওয়াহিদা হুদার প্লট ফেরত দেওয়ার আবেদনটি গ্রহণ করে রাজউক কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর ও ২৫ নভেম্বর রাজউকে প্লট ফেরত দেওয়ার পৃথক দুটি আবেদন করেন মিসেস হুদা।

ইতিমধ্যে অনুমোদনপত্রের অনুলিপি রাজউক পরিচালক (ভূমি ও এস্টেট-২), রাজউকের চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব, প্রকল্প পরিচালক, রাজউক উপ-পরিচালক (হিসাব) ও মিসেস ওয়াহিদা হুদা বরাবর পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

রাজউক উপ-পরিচালক (এস্টেট-৩) স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, মিসেস ওয়াহিদা হুদার প্লট সমর্পণ ও জমাকৃত অর্থ ফেরতের আবেদনটি যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত হওয়ায় মিসেস ওয়াহিদার নামে বরাদ্দকৃত ৫ কাঠা (সেক্টর-৫, রাস্তা নং-৩০৯, প্লট-৪৯) আয়তনের ওই প্লটটি বাতিল করা হলো।

চলতি বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজউকের বর্তমান চেয়ারম্যান বরাবর প্লট ফেরত দেওয়ার আবেদন করেন মিসেস ওয়াহিদা হুদা। ওই আবেদনপত্র তিনি রাজউকের প্রচলিত বিধি-বিধান অনুসারে পূর্বাচল প্রকল্পের মূল অধিবাসী হিসেবে প্লট বরাদ্দ পাওয়ার কথা দাবি করে লিখেন, 'বরাদ্দকৃত প্লটের ক্ষেত্রে রাজউকের প্রচলিত বিধি বিধানের কোনোরূপ ব্যত্যয় হয়ে থাকলে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার স্বার্থে আমাকে পুরো বিষয়টি অবহিত করলে আমি রাজউক বরাবর প্লটটি সমর্পণ করতে প্রস্তুত আছি। ’

এরপর ২৫ নভেম্বর পুনরায় অপর এক আবেদনপত্রে প্লটটি সমর্পণ করার সিদ্ধান্তের কথা জানান মিসেস ওয়াহিদা হুদা। ওই আবেদনপত্রে তিনি বলেন, বর্তমানে অধিকতর স্বচ্ছতার জন্য ও আমার স্বামীকে যাতে বিব্রতকর পরিস্থিতির সন্মুখীন হতে না হয়, সেজন্য প্লটটি রাজউক বরাবর সমর্পণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ’

ওই দুই আবেদন পত্রের প্রেক্ষিতে গত ৬ ডিসেম্বর মিসেস ওয়াহিদা হুদার আবেদনটি গ্রহণ করে রাজউক।

দুদকের কাছে থাকা অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে, নূরুল হুদা রাজউকের চেয়ারম্যান থাকাকালে রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৯ নম্বর সেক্টরের ১০৩ নম্বর রোডে ১০ কাঠা আয়তনের একটি প্লট (প্লট নং-১৯) বরাদ্দ নেন। এ সময় স্ত্রী ওয়াহিদা হুদার নামে একই প্রকল্পের সেক্টর-৫, রোড-৩০৯, প্লট নং-৪৯ নম্বরে ৫ কাঠার আরেকটি প্লট বরাদ্দ নেন।

অনেক গ্রাহক সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েও ‘ক্ষতিগ্রস্ত’ কোটায় এ প্রকল্পে এখনো প্লট পাননি। কিন্তু নূরুল হুদা তার স্ত্রীকে গাজীপুরের কালিগঞ্জ উপজেলার ‘মূল অধিবাসী’ ও ‘ক্ষতিগ্রস্ত’ দেখিয়ে ‘ক্ষতিগ্রস্ত কোটায়’ প্লটের বরাদ্দ নেন। অথচ রাজধানীর তেজগাঁও শিল্প এলাকায়ও নূরুল হুদা দম্পতির প্লট রয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী, স্বামীর নামে সরকারি প্লট থাকার পর আর স্ত্রীর নামে প্লট নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৫
এডিএ/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।