ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

বেহাল দশায় মোবাইল টয়লেট

হাসিবুর রহমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০১৬
বেহাল দশায় মোবাইল টয়লেট ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ভাসমান ও পথচারীদের ব্যবহারের জন্য রাজধানীতে মোবাইল টয়লেটের (ভ্রাম্যমাণ শৌচাগারের) ব্যবস্থা করা হলেও মান ভালো না হওয়ায় আকৃষ্ট করা যায়নি সব শ্রেণী পেশার মানুষকে। আবার সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ এবং স্থানের অভাবেও টয়লেটগুলোতে সৃষ্টি হয়েছে দুরবস্থা।


 
রাজধানীতে বসবাসরত ভাসমান মানুষই রয়েছেন কয়েক লাখ, যারা কোনো শৌচাগার ব্যবহারের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এদের বেশিরভাগই পার্ক কিংবা সড়কের পাশেই মল-মূত্র ত্যাগ করছেন। এছাড়া নগরীতে প্রতিদিন চলাচলকারী সাধারণের ব্যবহার উপযোগী গণশৌচাগারের সংখ্যাও অত্যন্ত নগন্য।
 
রাজধানীতে পথ চলতে গেলে অনেক সময় মানুষের মল-মূত্রের গন্ধে দম বন্ধ হওয়ার অবস্থা হয়। নাকে কাপড় চেপেও এসব স্থানের পাশ দিয়ে যাতায়াত করা কঠিন হয়ে পড়ে। মল-মূত্র থেকে ছড়াতে পারে বিভিন্ন ধরণের রোগ ব্যাধিও। সব দিক বিবেচনায় মোবাইল টয়লেটগুলো হতে পারতো ভালো বিকল্প।
 
ওয়াটার এইডের আর্থিক সহায়তায় ২০১১ সালের নভেম্বরে এসোসিয়েশন ফর রিয়েলাইজেশন অব বেসিক নিডস (আরবান) নামে সাড়ে চার বছর মেয়াদী এ প্রকল্পটি চালু হয়। প্রকল্পের আওতায় ৪৬টি মোবাইল টয়লেট তৈরি করা হয়, যার ৩৬টি নগরীর বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা হয়েছে। বাকি দশটি ব্যবহৃত হয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ব্যবহারের জন্য। প্রকল্পের শেষ দিকে এসে দেখা যাচ্ছে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত এ শৌচাগারগুলোর বেশির ভাগের অবস্থাই বেহাল। আবার নিম্ন বিত্ত শ্রেণীর মানুষ ছাড়া কেউই খুব একটা এ টয়লেটগুলো ব্যবহার করছে না।
 
নিউমার্কেটের এক নম্বর গেটের পাশেই এ রকম একটি মোবাইল টয়লেটকে অকেজো অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। পরিত্যক্ত মোবাইল টয়লেটটির পাশেই মূত্রত্যাগ করছেন পথচারী থেকে শুরু করে রিক্সাচালক পর্যন্ত।
 
নিউমার্কেটের মোবাইল টয়লেটটির পাশেই কথা হয় রিক্সাচালক মো. জামালউদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, এইডা (মোবাইল টয়লেট) চালু থাকলে রাস্তার পাশে বইতাম না, টয়লেটেই যাইতাম। রিক্সা চালাই পাঁচ-দশ ট্যাকা লাগলে দিতে রাজি আছি কিন্তু এইডাতো বন্দই থাহে। কুন রাস্তার পাশেই সরকারের টয়লেট নাই। ’
 
শৌচাগারটির পাশেই কথা হয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সানাউল আরেফিনের সাথে। তিনি বলেন, ‘এ টয়লেটগুলো পাবলিক টয়লেটের বিকল্প হতে পারত কিন্তু নোংরা পরিবেশ এবং মান ভালো না হওয়ায় অনেকেই যেতে চায় না। আর বন্ধ পড়ে থাকলে কি অবস্থা হয় তাতো দেখতেই পাচ্ছেন। ’

এছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ, জাতীয় প্রেসক্লাব, পান্থকুঞ্জ, বনানী পুলিশ ফাঁড়ি এলাকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ৩৬টি মোবাইল টয়লেট রয়েছে। কিন্তু টয়লেটগুলোর অবস্থান এবং পরিবেশ ভালো না হওয়ায় এগুলো সাধারণ মানুষকে খুব একটা আকৃষ্ট করতে পারেনি।
 
এ বিষয়ে ওয়াটার এইডের প্রজেক্ট ম্যানেজার এ ই এম মোবাশ্বের হোসেন বলেন, প্রকল্পগুলোর মেয়াদ ইতিমধ্যে শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে, এগুলোর অধিকাংশের মালিকানাই এখন এর পরিচালনাকারীদের। তবে মলমূত্র ত্যাগে স্থায়ী ও মানসম্মত ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত এগুলো চালু থাকবে।

রাজধানীজুড়ে বিভিন্ন পেট্রোলপাম্প ও সিটি কর্পোরেশনের সুবিধাজনক স্থানে স্থায়ীভাবে টয়লেট নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৬
এইচআর/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।