ঢাকা, রবিবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

রাজাকারের ছেলে আ’লীগ মেয়র প্রার্থী!

তুষার তুহিন, স্টাফ করেসপন্ডেট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৬
রাজাকারের ছেলে আ’লীগ মেয়র প্রার্থী!

কক্সবাজার: ২০ মার্চ মহেশখালী পৌরসভার নির্বাচন। আর এতে মেয়র পদে উপজেলা ও কক্সবাজার জেলা আ’লীগের মনোনীত একক প্রার্থী মহেশখালী উপজেলার যুদ্ধাপরাধী তালিকার ২২নং আসামি হাশেম সিকদার ওরফে বড় মোহাম্মদের ছেলে মকসুদ মিয়া।

তাকে একক প্রার্থী হিসেবে ঘোষণার জন্য কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগকেও সুপারিশ করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড।

স্থানীয় সূত্র মতে, মকসুদ মিয়ার বাবা শান্তি কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তার চাচা মৌলভী জাকারিয়া সিকদার ওই কমিটির সভাপতি ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত। ট্রাইবুন্যাল থেকে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। কিন্তু তিনি পলাতক। এছাড়া ১৯৭১ সালে হিন্দু সম্প্রাদায়ের ওপর তাণ্ডবলীলা চালিয়েছেন ওই পরিবারের কমপক্ষে ৯ জন সদস্য। যাদের বিরুদ্ধে ট্রাইবুন্যালে বিচার চলমান রয়েছে।

এ বিষয়ে মহেশখালী পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর পূর্ণ চন্দ্র দে বাংলানিউজকে জানান, মকছুদ মিয়াকে নৌকার টিকেট দেওয়া মানে স্বাধীনতার পরাজয়। ওই রাজাকারের ছেলের গোষ্ঠীতে কমপক্ষে ৯ জন যুদ্ধাপরাধী রয়েছে। এর অনেক দলিল প্রমাণ ট্রাইবুন্যালে রয়েছে। অথচ এমন একজনকে একক প্রার্থী ঘোঘণা করার জন্য আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতা উঠে পড়ে লেগেছে।

তিনি জানান, নিজ পরিবারের অপরাধকে আড়াল করতেই সুকৌশলে মকছুদ মিয়া আওয়ামী লীগে যোগ দেন। আর উপজেলা আ’লীগের কতিপয় নেতারা অর্থের বিনিময়ে তাকে দলে ভিড়িয়েছেন।

তিনি বলেন, মকছুদ মিয়াকে আ’লীগের টিকেট না দিতে ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডসহ জেলা আ’লীগের মনোনয়ন বোর্ডকে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছি। এরপরও যদি যুদ্ধাপরাধের বিচারকে বানচাল করার ষড়যন্ত্র স্বরূপ তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয় তাহলে আদালতের আশ্রয় নিব।

এদিকে দলীয় সূত্র জানায়, এবারের মেয়র পদে লড়ার জন্য মকছুদ মিয়া ছাড়াও আওয়ামী লীগের আরও কয়েকজন নেতা ছিলেন। তাদের মধ্যে একজন সাবেক পৌর মেয়র ও কক্সবাজার জেলা আ’লীগের সদ্য বিদায়ী কমিটির সহ সভাপতি ডা. নুরুল আলম। কিন্তু উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা মকছুদ মিয়াকে পছন্দ করেছেন।

এ বিষয়ে মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার পাশা চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, মকছুদ মিয়া বর্তমান মেয়র। তার বাবা ও চাচারা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত এটা সত্য। তার পরিবারের অনেক সদস্য শান্তি কমিটির নেতা ছিলেন। কিন্তু মকছুদ মিয়া ২০০২ সালে আ’লীগে যোগ দেন। সেই থেকে দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ তিনি। তার আমলে পৌরসভার অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। সবকিছু মিলে মকছুদকে যোগ্য মনে হওয়ায় তাকে একক প্রার্থী করা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা আ’লীগের সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা বাংলানিউজকে জানান, তৃণমূলের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে কেন্দ্রে মকছুদের একক নাম পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্র যদি তাকে যোগ্য মনে করেন তবে মকছুদকে দিবেন অথবা কেন্দ্রের ঘোষিত প্রার্থীর পক্ষে একজোট হয়ে কাজ করবে আওয়ামী লীগ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৬
টিটি/আইএসএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।