ঢাকা, রবিবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

বাহুবলে ৪ শিশু হত্যা

পূর্ব বিরোধের জেরে অপহরণের পর হত্যা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৬
পূর্ব বিরোধের জেরে অপহরণের পর হত্যা

বাহুবলের সুন্দ্রাটিকি থেকে ফিরে (হবিগঞ্জ): পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার সুন্দ্রাটিকি গ্রামের ৪ শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

হত্যাকারীদের ধরিয়ে দিতে এক লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে পুলিশ।

এরইমধ্যে দুইজনকে আটক করা হয়েছে।

মৃত শিশুরা হলো, সুন্দ্রাটিকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র জাকারিয়া শুভ (৮), তার চাচাতো ভাই প্রথম শ্রেণির ছাত্র মনির মিয়া (৭), চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র তাজেল মিয়া (১০) ও তাজেলদের প্রতিবেশী সুন্দ্রাটিকি মাদ্রাসার ছাত্র ইসমাইল মিয়া (১০)।

অপহরণের ৫ দিন পর বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে গ্রাম থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরের ইছারবিল খালের পাশে বালুমিশ্রিত মাটিচাপা অবস্থায় ওই শিশুদের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্র জানায়, শিশু মনির, শুভ ও তাজেলের বাবার সঙ্গে একটি বড়ই গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে একই গ্রামের পঞ্চায়েত আব্দুল আলী ওরফে বাগল মিয়ার সঙ্গে বিরোধ ছিল। ওই বিরোধের জের ধরে ওই শিশুদের অপহরণের পর হত্যা করা হয়।

এ ব্যাপারে শিশু মনিরের বাবা আবদাল মিয়া বাংলানিউজকে জানান, ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় গ্রামের পাশে ফুটবল খেলা দেখতে গেলে একই গ্রামের সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক বাচ্চু মিয়ার সহযোগিতায় তার ছেলেসহ চার শিশুকে অপহরণ করেন বাগল মিয়া।

অটোরিকশা চালক বাচ্চু মিয়া এ বিষয়ে জানান, তিনি ওইদিন অটোরিকশায় তার নিজের দুই ছেলে ও পঞ্চায়েত বাগল মিয়ার দুই নাতিকে তুলেছিলেন।

এদিকে, শিশুরা নিখোঁজ হলে পরদিন ১৩ ফেব্রুয়ারি মনিরের বাবা আবদাল মিয়া ও জাকির হোসেন শুভর বা‍বা ওয়াহিদ মিয়া বাহুবল মডেল থানায় বাগল মিয়া ও বাচ্চু মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করতে যান।

কিন্তু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন মামলা না নিয়ে তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। পরে সাধারণ ডায়েরি নেওয়া হয়।

কিন্তু ১৬ ফেব্রুয়ারি শিশুদের হদিস না মেলায় তৎপর হয়ে উঠে পুলিশ-র‌্যাব। বুধবার সকালে স্থানীয়রা ইছারবিল ছড়ার পাশে বালুমিশ্রিত মাটিতে চাপা দেওয়া অবস্থায়  এক শিশুর হাত ও আরেক শিশুর পা দেখতে পান।

পরে খবর পেয়ে পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্রের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই ঘণ্টা চেষ্টার পর চার শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ সময় পুলিশ সেখান থেকে বড়দের এক জোড়া জুতা উদ্ধার করে।

খবর পেয়ে সিলেটের বিভাগীয় পুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান পিপিএম সুন্দ্রাটিকি গ্রাম পরিদর্শন করে হত্যাকারীদের ধরিয়ে দিতে পারলে এক লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেন।

এ ছাড়া শিশুদের দাফনের খরচ হিসেবে প্রতি পরিবারকে ২০ হাজার টাকার আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক সাবিনা আলম।

অপরদিকে, ওসি মোশারফ হোসেন জানিয়েছেন, অভিযুক্ত বাগল মিয়া ও তার ছেলে জুয়েল মিয়াকে রাত সাড়ে ৮টার দিকে আটক করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৬
এসআর

** মামলা না নিয়ে তবজি পড়াতে বলেছিলেন ওসি!

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।