ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত আমাদের কোনো সদস্যের অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ ও কর্মকাণ্ড বরদাস্ত করা হবে না।
বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর মিরপুর সেনা নিবাসে ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের (ডিএসসিএসসি) শেখ হাসিনা কমপ্লেক্সে আয়োজিত ডিএসসিএসসি গ্র্যাজুয়েটদের মাঝে সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা চাইবো দেশের সুনাম অক্ষুণ্ন থাকুক। কোনোভাবেই সশস্ত্র বাহিনী প্রশ্নবিদ্ধ হোক-চাই না।
বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন সময় দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ অন্যান্য উদ্ধার কাজে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ বিশেষ করে বড় ধরনের অবকাঠামো নির্মাণে দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে।
শান্তিরক্ষা মিশনে থাকা বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, শুধু দেশে নয়, বহির্বিশ্বেও বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা তাদের সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতা দিয়ে ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছে। দায়িত্বপালনে সাহসের পরিচয় দিয়েছে।
এসময় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে জীবন দানকারী বাংলাদেশের ১২৮ জন বীর সদস্যদের কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যেকোনো ত্যাগ স্বীকারের জন্য প্রস্তুত থাকতে সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান।
‘জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ নেতৃত্বের স্থানে রয়েছে। বাংলাদেশ শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণাকারী দেশ। বিশ্বে মোট শান্তিরক্ষীদের প্রতি ১০ জনের ১ জন বাংলাদেশি। ১৯৮৮ সালে শুরুর বছর পর্যবেক্ষক থেকে শুরু করে পরবর্তীতে শান্তিরক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হওয়া মোট ৬৬টি মিশনের মধ্যে বাংলাদেশ ৪৫টিতে অংশ নেয়। ’ - ২০১১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনের দেওয়া এ বক্তব্য উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে আজ আপনারা সমর বিজ্ঞানে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেছেন। এই প্রশিক্ষণে অর্জিত জ্ঞান আপনাদের আরো দায়িত্বশীল করে তুলবে। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আত্মবিশ্বাসী করবে, উচ্চ পদে নেতৃত্ব দিতে নিজেদের প্রস্তুত করবে।
এ বছর ডিএসসিএসসি কোর্সে গ্র্যাজুয়েশন সার্টিফিকেট অর্জন করেন ২৬৮ জন। যার মধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৫৮ জন, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ২৩ জন, বিমানবাহিনীর ২০ জন ও বিদেশি ৬৭ জন অফিসার রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী তাদের সনদ তুলে দেন।
বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ব্রাজিল, চীন, মিশর, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, কুয়েত, লাইবেরিয়া, মালয়েশিয়া, মায়ানমার, নেপাল, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, প্যালেস্টাইন, ফিলিপাইন, সৌদি আরব, সিয়েরালিয়োন, শ্রীলংকা, সুদান, তানজানিয়া, তুরস্ক, উগান্ডা, যুক্তরাষ্ট্র এবং জাম্বিয়া থেকে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা কোর্সে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল সাজ্জাদুল হক।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৬/আপডেট: ১৪১১ ঘণ্টা.
এমইউএম/এটি