ঢাকা: জামায়াতের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের আব্দুল আজিজ ওরফে ঘোড়ামারা আজিজসহ পলাতক ছয়জনের বিরুদ্ধে আগামী ২০ মার্চ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিলের দিন পুনর্নির্ধারণ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
ঘোড়ামারা আজিজ ছাড়া একই মামলার বাকি পাঁচ আসামি হচ্ছেন মো. রুহুল আমিন ওরফে মঞ্জু, মো. আবদুল লতিফ, আবু মুসলেম মো. আলী, মো. নাজমূল হুদা ও মো. আব্দুর রহিম মিয়া।
বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের জন্য আরও দুই মাস সময়ের আবেদন জানান প্রসিকিউটর ঋষিকেশ সাহা। আবেদন মঞ্জুর করে ২০ মার্চ তা দাখিলের দিন পুনর্নির্ধারণ করেন বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল।
গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর ছয়জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন তদন্ত সংস্থা। সেদিনই তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের কাছে হস্তান্তর করেন তদন্ত কর্মকর্তারা। এর ভিত্তিতে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) তৈরি করে ট্রাইব্যুনালে দাখিল করবেন প্রসিকিউশন।
ছয়জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইনের ৩(১), ৪(১) ও ৪(২) ধারা অনুসারে হত্যা, গণহত্যা, আটক, অপহরণ, নির্যাতন, গুম, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের তিনটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৩ জন ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারসহ ১৫ জনকে হত্যা-গণহত্যা ও তাদের মরদেহ গুম, ৩ জনকে আটক ও অপহরণ করে নির্যাতন এবং তাদের বাড়ি-ঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ।
একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৯ অক্টোবর থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত বর্তমান গাইবান্ধা সদর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তারা অপরাধগুলো সংঘটিত করেন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
৬ খণ্ডে ৮৭৮ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনে বিভিন্ন ধরনের সাক্ষ্য-প্রমাণ, দলিল ও ডকুমেন্টস রয়েছে। এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেড এম আলতাফুর রহমান ও হেলাল উদ্দিন ২০১৪ সালের ২৬ অক্টোবর থেকে গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত তদন্তকাজ সম্পন্ন করেন।
ঘটনার ২৫ জন ও জব্দ তালিকার ৩ জনসহ মোট ২৮ জন সাক্ষী ৬ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে গত বছরের ২৬ নভেম্বর ৬ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।
২০০৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সুন্দরগঞ্জের পাঁচগাছী শান্তিরাম গ্রামের মরহুম আলম উদ্দিনের ছেলে আজিজার রহমান সরকার বাদী হয়ে আবদুল আজিজের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মুক্তিযুদ্ধকালে আজিজার রহমানের বড় ভাই মো. বয়েজ উদ্দিনকে নির্যাতনের পর হত্যার অভিযোগে ওই মামলাটি করা হয়। অন্যদিকে ধর্মপুর গ্রামের আকবর আলীকে হত্যার অভিযোগে জামায়াত নেতা আবদুল আজিজের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেন আনিছুর রহমান।
এছাড়া ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বামনডাঙ্গা পুলিশ ফাঁড়ির চার পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা মামলার আসামি জামায়াত নেতা আব্দুল আজিজ।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৫
এমএইচপি/এএসআর