কক্সবাজার: আগামী ২০ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য মহেশখালী পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে বর্তমান মেয়র ও পৌরসভা আ’লীগের সভাপতি মকছুদ মিয়ার নাম। কক্সবাজার জেলা আ’লীগের সুপারিশক্রমে কেন্দ্র থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি বিকেলে তার নাম ঘোষণা করা হয়।
কিন্তু মেয়র ও পৌরসভা আ’লীগ সভাপতির বাইরে তার আরেকটি পরিচয় হলো মহেশখালী উপজেলার যুদ্ধাপরাধী তালিকার ২২ নম্বর আসামি হাশেম সিকদার ওরফে বড় মোহাম্মদের ছেলে মকছুদ মিয়া।
স্থানীয় সূত্র মতে, মকছুদ মিয়ার বাবা শান্তি কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তার চাচা মৌলভী জাকারিয়া সিকদার ওই কমিটির সভাপতি ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত। ট্রাইবুন্যাল থেকে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। কিন্তু তিনি পলাতক। এছাড়া ১৯৭১ সালে হিন্দু সম্প্রাদায়ের ওপর তাণ্ডবলীলা চালিয়েছেন ওই পরিবারের কমপক্ষে ৯ জন সদস্য। যাদের বিরুদ্ধে ট্রাইবুন্যালে বিচার চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে মহেশখালী পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর পূর্ণ চন্দ্র দে বাংলানিউজকে জানান, মকছুদ মিয়াকে নৌকার টিকেট দেওয়া মানে স্বাধীনতার পরাজয়। ওই রাজাকারের ছেলের গোষ্ঠীতে কমপক্ষে ৯ জন যুদ্ধাপরাধী রয়েছে। এর অনেক দালিলিক প্রমাণ ট্রাইবুন্যালে রয়েছে। অথচ এমন একজনকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের এ দলটি।
তিনি জানান, নিজ পরিবারের অপরাধকে আড়াল করতেই সুকৌশলে মকছুদ মিয়া আওয়ামী লীগে যোগ দেন। আর উপজেলা আ’লীগের কিছু নেতারা অর্থের বিনিময়ে তাকে দলে ভিড়িয়েছেন।
তিনি বলেন, মকছুদ মিয়াকে আ’লীগের টিকেট না দিতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডসহ জেলা আ’লীগের মনোনয়ন বোর্ডকে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছিলাম। এরপরও তাকে নৌকা প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এটি দুঃখজনক। এবার এ যুদ্ধাপরাধীর ছেলের মনোনয়ন বাতিলের জন্য উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবো।
এদিকে দলীয় সূত্র জানায়, এবারের মেয়র পদে লড়ার জন্য মকছুদ মিয়া ছাড়াও আওয়ামী লীগের আরও কয়েকজন নেতা ছিলেন। তাদের মধ্যে একজন সাবেক পৌর মেয়র ও কক্সবাজার জেলা আ’লীগের সদ্য বিদায়ী কমিটির সহ-সভাপতি ডা. নুরুল আলম। কিন্তু উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা মকছুদ মিয়াকে পছন্দ করেছেন।
এ বিষয়ে মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার পাশা চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, মকছুদ মিয়া বর্তমান মেয়র। তার বাবা ও চাচারা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত এটা সত্য। তার পরিবারের অনেক সদস্য শান্তি কমিটির নেতা ছিলেন। কিন্তু মকছুদ মিয়া ২০০২ সালে আ’লীগে যোগ দেন। সেই থেকে দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ তিনি। তার আমলে পৌরসভার অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। সবকিছু মিলে মকছুদকে যোগ্য মনে হওয়ায় তাকে একক প্রার্থী করা হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা আ’লীগের সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা বাংলানিউজকে জানান, তৃণমূলের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে কেন্দ্রে মকছুদের একক নাম পাঠানো হয়। কেন্দ্রও তাকে যোগ্য মনে করেছে বিধায় কেন্দ্র থেকেই মকছুদকেই নৌকা প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৬
টিটি/আইএসএ/টিসি