ঢাকা: রাজধানীর শাহজাহানপুরে পাইপে পড়ে নিহত শিশু জিহাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) এ সংক্রান্ত রুলের রায়ে এ নির্দেশ দেন বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
এ বিষয়ে করা রিটের শুনানি নিয়ে গত বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি শিশু জিহাদের পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন একই বেঞ্চ।
একইসঙ্গে শিশু জিহাদের মৃত্যুতে ফায়ার সার্ভিস, ওয়াসা রেলওয়ে ও সিটি করপোরেশনের অবহেলা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং ফায়ার সার্ভিস, ওয়াসা ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে সারাদেশে কতোগুলো অরক্ষিত পাইপ, ঢাকনাবিহীন পাইপের গর্ত ম্যানহোল ও পয়ঃনিস্কাশন পাইপ রয়েছে তার একটি তালিকা তৈরি করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তাও জানতে চেয়েছিলেন আদালত।
পাশাপাশি আগের দুই বছরে ফায়ার সার্ভিস কি পরিমাণ যন্ত্রপাতি ক্রয় করেছে এবং ট্রেনিং করেছে তার তথ্য গত বছরের ১৫ মের মধ্যে আদালতকে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট এ রুল মঞ্জুর করে রায় দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমাতুল করীম।
রায়ের পর আব্দুল হালিম বাংলানিউজকে বলেন, আদালত রুল মঞ্জুর করেছেন। তবে কতো টাকা ক্ষতিপূরণ আর ক্ষতিপূরণ কে দেবে তা রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপিতে উল্লেখ করা হবে বলে জানিয়েছেন আদালত।
আব্দুল হালিম বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে বোঝা গেলো, জিহাদের মৃত্যুর ঘটনায় সরকারি কর্তৃপক্ষই দায়ী। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে কারা দায়ী থাকবেন বা কী ধরনের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে- সেসব বিষয়ে একটি গাইডলাইন দেবেন আদালত। ১৯৮৩ সালে ভারতে ক্ষতিপূরণের বিষয়টি চালু হয়। কিন্তু বাংলাদেশে ৪৫ বছরের মধ্যে এটাই প্রথম।
জিহাদের বাবা-মা আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পরে জিহাদের বাবা নাসির উদ্দিন বলেন, আদালতের রায় মানতে বাধ্য। শুধু সরকার ও পুলিশের কাছে আমার আবেদন-কেউ যেন আমাকে হুমকি-ধমকি না দেন। কারণ, অপরিচিতরা আমাকে বিভিন্ন সময় হুমকি-ধামকি দেন মামলা তুলে নেওয়ার জন্য। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে বাসার কাছে শাজাহানপুর রেলওয়ে মাঠের পাম্পের পাইপে পড়ে যায় জিহাদ। প্রায় ২৩ ঘণ্টা পর ২৭ ডিসেম্বর বিকেল তিনটার দিকে জিহাদকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এরপর শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এরপর ২৮ ডিসেম্বর জিহাদের পরিবারের জন্য ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে চিল্ড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৬
ইএস/এএসআর