ঢাকা: বাংলা ভাষার অধিকার আদায়ের সৈনিক হিসেবে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা চেয়েছেন লক্ষীপুর সদর উপজেলার ফতেহ ধর্মপুর গ্রামের বাসিন্দা আবু নুর এমডি শামসুল ইসলাম ওরফে নুরু মোল্লা।
বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ মর্যাদা দাবি করেন।
নুরু মোল্লা বলেন, ‘আমি ভাষার জন্য সংগ্রাম করেছি। আমার চাওয়া-পাওয়া কিছু নেই। কেবল রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিটুকু চাই। ’
তিনি বলেন, ‘১৯৫২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে ভাষা সৈনিক মোহাম্মদ তোয়াহা‘র বাসায় সভা হয়। ওই সভায় আমি উপস্থিত থেকে প্রথম দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের ঘোষণা দেই। ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ভঙ্গের ঐতিহাসিক ঘোষণাটি প্রথম আমার কণ্ঠ থেকেই হয়। ’
‘সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় আমরা সভা করি। সভায় সভাপতিত্ব করেন গাজীউল হক। এরপর মিছিল বের হলে ওঁৎ পেতে থাকা পুলিশ গুলি চালায়। গুলিতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ অনেকে শহীন হন। আহত হন অনেকে। ’
‘ওই সময় পুলিশ মিছিল থেকে অনেককে গ্রেফতার করে। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে এক শহীদের লাশ গোপনে লুকিয়ে ফেলি। পরদিন ২২ ফেব্রুয়ারি ওই লাশ নিয়ে মিছিল বের করলে পুলিশ আবারও গুলি চালায়। শহীদ হন আরও দু’জন। কিন্তু সেই দুই শহীদের নাম জানা যায়নি। এই ঘটনাটা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের সামনে। ’
নুরু মোল্লা বলেন, ‘আমি একজন ভাষা সৈনিক এটা অনেকেরই অজানা। প্রচারবিমুখ হওয়ায় আমার নাম ভাষা সৈনিকদের তালিকায় উঠে আসেনি। তাতে আমার দুঃখ নেই। জীবন সায়াহ্নে এসে ভাষা আন্দোলনে নিজের অংশগ্রহণের ব্যাপারে মুখ খুলতে আজ বড়ই লজ্জা লাগে। কারণ সবকিছু ব্যক্তি স্বার্থকেন্দ্রিক ও ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। আমরা হয়ে গেছি আত্মকেন্দ্রিক। ’
‘৩-৪ বছর আগে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের কাছে ভাষা সৈনিক হিসেবে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়ার জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু এখনও কোনো সাড়া মেলেনি। ’
বর্তমান তালিকায় থাকা ভাষা সৈনিকের অনেকেই আন্দোলনে ছিলেন না দাবি করে নুরু মোল্লা বলেন, ‘আমি চাই, গ্রামে-গঞ্জের যারা ভাষা সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছেন, তাদের খুঁজে বের করে যেন মর্যাদা দেওয়া হয়। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৬
টিএইচ/এনএইচএফ/এইচএ/