ঢাকা, রবিবার, ৫ মাঘ ১৪৩১, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

সরকারের লক্ষ্য সাড়ে ৪ লাখ কোটি টাকার বাজেট

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৬
সরকারের লক্ষ্য সাড়ে ৪ লাখ কোটি টাকার বাজেট

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: সরকারের লক্ষ্য মেয়াদের শেষ অর্থবছরে (২০১৮-১৯) ৪ লাখ ৪০ হাজার কোটি থেকে ৪ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকার বাজেট। এই লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখেই সরকার এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।



বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা জানান।
 
অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশ স্বাধীনের সময় আমাদের দেশের ৭০ শতাংশ লোক দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করতো। এখন সেই অবস্থার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমানে ২৪ দশমিক ৮ শতাংশ লোক দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে।
 
তিনি বলেন, কিছু লোক আছে সর্বদাই রাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল থাকে। এই হার ১০ থেকে ১৪ শতাংশ। এরা হলেন প্রবীণসহ অসহায় কিছু লোক। এরা সবসময়ই রাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল থাকবে। আমরা আস্তে আস্তে সেই অবস্থায় চলে যাচ্ছি। এক সময় এরাই শুধু রাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল থাকবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, এদেশের মানুষ এখন বিশ্বাস করে না যে জীবন ধারণ কষ্টসাধ্য, তারা মনে করে জীবন ধারণের মান আরও উপরে উঠবে। ২০৪১ সালের মধ্যে জীবনমান অনেক উন্নত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী, ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবো আমরা।

অর্থমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আগামী অর্থবছরেই বাজেট উপস্থাপন বেশ বদলে যাবে। এই সরকারের মেয়াদের শেষ দিকে অর্থাৎ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে যে বাজেট দিবো সেটা হবে ৪ লাখ ৪০ হাজার কোটি থেকে ৪ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকার। এ লক্ষ্যমাত্রা আমাদের রয়েছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, লক্ষ্য ছিল মুক্তবাজার অর্থনীতি। মুক্তবাজার আজও প্রতিষ্ঠা পায়নি, হয়তো ২০৩০ সালে মুক্তবাজার প্রতিষ্ঠা পাবে। মুক্তবাজার অর্থনীতি না হওয়ার কারণ আমাদের রাজনৈতিক অবস্থা ও প্রেক্ষাপট সেভাবে ছিল না। মুক্তবাজারে কোনো ধরনের কাস্টম শুল্ক থাকবে না। হয়তো সেটা পুরোপুরি কোনো দিনই হবে না। কেননা মানুষের মধ্যে যেমন কিছু ভাল রিপু থাকে...তেমন খারাপ।

আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, আমাদের বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয় না। বাজেটের লক্ষ্যমাত্রা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে হবে। এজন্য কেন্দ্রীয় আমলাতন্ত্র সংকোচন করে জেলায়, জেলায় পাঠিয়ে দিতে হবে। এক্ষেত্রে আমাদের রাজনীতিবিদদের যে ব্যর্থতা তা আশা করি কাটিয়ে উঠতে পারবো।

তিনি বলেন, ৬৮ বছর আগে আমাদের দেশ বিদেশি কলোনি থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনতা লাভ করে। কিন্তু ৬৮ বছরে আমাদের সীমানা নির্ধারিত হয়নি, এখন আমরা একটা সীমানা পেয়েছি, যার সীমানা নির্ধারিত। দেশের মানুষ জানে তার সীমানা কতটুক। এটা শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারণেই হয়েছে।

দেশের অর্থনীতির একটি শক্ত অবস্থান হলো বৈদেশিক রেমিট্যান্স উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এই রেমিট্যান্সকে আমরা আরও অনেক বেশি বাড়াতে পারব, যখন স্কিল ইমপ্রুভমেন্ট প্রোগ্রামটি কার্যকর হবে। এই প্রোগ্রামের জন্য আমরা এক কোটি ৪৫ লাখ টাকা রাখার পরিকল্পনা করেছি। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এজন্য বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করে এই উদ্যোগটি এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।

এই দিকটিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মুহিত বলেন, এটাতেই রয়েছে আমাদের ভবিষ্যতের স্বপ্ন। স্কিল ইমপ্রুভমেন্ট না করলে আমরা যেসব সুন্দর সুন্দর স্বপ্ন দেখছি সেটা পূরণ হবে না।

তিনি বলেন, এই স্বপ্ন পূরণের জন্য আরেকটি বিশেষ দিকের দিকে গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন আছে। বাংলাদেশের জনগণই তার শক্তি। বাংলাদেশের এক একটি জেলাতে প্রায় ২০ থেকে ২২ লাখের মত লোক আছে। পৃথিবীর প্রায় ৬০টি দেশের জনগণ এই সংখ্যার নিচে। ঢাকা ও চট্টগ্রামকে বাদ দিয়ে আমাদের দেশে বস্তুতপক্ষে ৬৪টি দেশ আছে।   সুতরাং আমাদের এ বিষয় নজরে রাখতে হবে এবং তা করতে হবে।

মুহিত বলেন, এই দেশের ভেতর দেশগুলো যেন উন্নয়নের পথে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যেতে পারে সেজন্য তাদের ক্ষমতায়ন করতে হবে। অর্থাৎ আমাদের জেলা কাউন্সিল ও জেলা পরিষদগুলোর ক্ষমতায়ন ব্যাপকভাবে বাড়াতে হবে এবং আমাদের কেন্দ্রীয় যে ব্যুরোক্রেসি বা আমলাতন্ত্র আছে, তা সংকোচন করে এর একটি বড় অংশকে জেলায় জেলায় পাঠিয়ে দিতে হবে।

এটি রাজনীতিবিদদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এখানে বাধা বিপত্তি আসবে। কিন্তু সেগুলো অসম্ভব রকমের স্বার্থহানা বাধাবিপত্তি। এই বাধা বিপত্তির উর্ধ্বে আমাদের উঠতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৬
এসকে/এসএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।