ঢাকা: রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সন্ধান পাওয়া জঙ্গিদের বোমা তৈরির কারখানা থেকে জব্দ করা বিপুল সংখ্যক বোমা নিষ্ক্রিয়করণের প্রস্তুতি নিচ্ছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট।
মোহাম্মদপুরে নবোদয় হাউজিংয়ের বি ব্লকের ২৮ নম্বরে আলহাজ মওলানা আব্দুল মালেকের বাড়িতে ভাড়া থেকে জঙ্গিরা সেখানে তাদের বোমা তৈরির কারখানা গড়ে তুলেছিল।
দুপুরে ডিএমপি’র বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে বোমা নিষ্ক্রিয়করণের প্রস্তুতি শুরু করেছে।
ডিএমপি'র অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম, ডিবি'র দক্ষিণ বিভাগের ডিসি মাশরুকুর রহমান খালিদ এবং তেজগাঁও বিভাগের ডিসি বিপ্লব কুমার সরকারসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত হয়েছেন।
ডিএমপি'র অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট এসেছে। কিছুক্ষণের মধ্যে জব্দকৃত বোমা ও বিস্ফোরকগুলো নিষ্ক্রিয় করা হবে। ওই বাড়ির পাশের দু’টি গলির একটিতে বোমা নিষ্ক্রিয় করা হবে এবং অপর গলিতে সেগুলো রাখা হবে।
গলিগুলোর মধ্যে জাকির ভিট সেন্টার গলিতে এ বোমাগুলো নিষ্ক্রিয় করা হবে বলেও জানান মনিরুল ইসলাম।
তিনি জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড্ডা থেকে দুই জঙ্গিকে আটক করা হয়। তারা হলেন, কামাল ওরফে শাহীন (২৬) এবং শাহ আলম ওরফে সালাউদ্দিন (৩০)। মোহাম্মদপুরের এই বাড়িতে শাহ আলম ওরফে সালাউদ্দিন ভাড়া থাকেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই এ বাসায় বোমা তৈরির কারখানার তথ্য পাওয়া যায়।
অন্যজনকে (কামাল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আটক করা হয়। কামালও জানান, বাড্ডা তাদের হেড অফিস এবং অপর জঙ্গি শাহ আলম ওরফে সালাউদ্দিন মোহাম্মদপুরের বাড়িটিতে থাকেন, যেখানে তাদের বোমা তৈরির কারখানা।
এরপর রাত সাড়ে ১০টা থেকে রাত আড়াইটা পর্যন্ত টানা অভিযান চলে মোহাম্মদপুরের বাড়িটিতে। আলো স্বল্পতার কারণে ফের অভিযান শুরু করা হয় শনিবার সকালে।
গ্রেফতার হওয়া দুই জঙ্গির বাসার আলামত দেখে তারা আনসার উল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য বলেও ধারণা করছেন মনিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, বিগত সময়ের অভিযানগুলোতে যে ধরনের বোমা পাওয়া গিয়েছিলো, সেগুলোর চেয়ে এবারের অভিযানে উদ্ধার হওয়া বোমাগুলো অনেক শক্তিশালী। এখানে আমরা পাঁচ ধরনের বোমা পেয়েছি। আর এগুলো আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের ফর্মুলায় তৈরি।
তিনি আরও বলেন, অভিযানের কারণে নবোদয় হাউজিং এলাকায় সাময়িক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। অভিযান শেষ হলে বিদ্যুৎ সংযোগ ফের চালু করা হবে।
মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে নতুন কোনো জঙ্গিকে গ্রেফতার করা না গেলেও ওই বাসার মালিক মওলানা আব্দুল মালেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক রাখা হয়েছে। সন্দেহভাজন আরও কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে বলেও জানান মনিরুল ইসলাম।
তিনি জানান,আটককৃত দুই জঙ্গি শাহীন (২৬) ও সালাউদ্দিনকে নিয়ে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
মনিরুল ইসলাম জানান, ছয়তলা ভবনটির পাঁচতলায় একটি ফ্ল্যাটে বোমা তৈরি করা হতো। পুলিশ অভিযানে গিয়ে দেখতে পায়, দেয়ালের বিভিন্ন স্থানে ‘বিপদ জনক’ লেখা কাগজের একাধিক টুকরা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এবং বিছানাসহ ফ্ল্যাটের বিভিন্ন স্থানে ছড়ানো-ছিটানো অবস্থায় বোমার নানা সরঞ্জাম ছিল। পাঁচতলার দুই ইউনিটের অপরদিকের ফ্ল্যাট থেকে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ১২ জনকে আটক করা হয়েছে। তবে আটককৃতরা সবাই কর্মচারী।
এদিকে শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাত থেকে উত্তরার আশকোনা এলাকায় অভিযান চালিয়েছে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। সেখানেও বিষ্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে ডিবি’র একটি সূত্র।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৬
এনএ/এসজেএ/এনএইচএফ/আরএইচএস/এএসআর
** মোহাম্মদপুরে বোমা তৈরির কারখানার সন্ধান, সরঞ্জাম জব্দ
** বাড্ডায় অভিযানে ২ জঙ্গি গ্রেফতার
** বাড্ডায় জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে ডিবি সদস্য আহত