দিনাজপুর: মাতৃভাষার জন্য ৫২’তে রক্ত দিয়েছেন, প্রাণ উৎসর্গ করেছেন বাঙালি। তবুও ভাষা আন্দোলনের ৬৪ বছর পরও দেশের সর্বত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি প্রমিত বাংলার ব্যবহার।
শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দিনাজপুর শহরের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ঘুরে ও মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশের অন্যান্য স্থানগুলোর মতো দিনাজপুরেও অধিকাংশ সরকারি প্রতিষ্ঠানে নেই বাংলার সঠিক ব্যবহারের উদ্যোগ। আর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে দেখা গেলো ইংরেজি ভাষা ব্যবহারের চল।
এসব প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা যায়, ইংরেজি শব্দকে বাংলা হরফের বানানে লিখে প্রতিষ্ঠানের ব্যানার, নামফলক তৈরি করা হয়েছে। এতে করে নতুন প্রজন্ম ও নাগরিকদের বাংলা ভাষা সম্পর্কে ভুল বার্তা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিমত সচেতন মহলের।
জেলার বিভিন্ন এলাকার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সাব ইন্সপেক্টরের কার্যলয়, অফিসার ইনচার্জের কার্যালয়, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি, অ্যাকাউন্ট অফিসারের কার্যালয়, সাব রেজিস্ট্রারের কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় এ ধরণের নামফলক চোখে পড়ে।
এসব ফলকে বাংলা বানানে ইংরেজি শব্দ লেখা বাংলা ভাষার সঠিক ব্যবহার ও বাস্তবায়নে অন্যতম বাধা বলে মত সংশ্লিষ্টদের।
এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মত, রক্তের বিনিময়ে পাওয়া বাংলা ভাষাকে ফেব্রুয়ারি এলেই আমরা প্রতিষ্ঠার কথা বলি। কিন্তু সর্বস্তরে আমরা দীর্ঘ সময়েও বাংলার প্রচলন ও প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়েছি। বাংলা ভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করতে না পারা আমাদের জন্য দুঃখজনক ও লজ্জার।
এ ব্যাপারে কথা হয় দিনাজপুর সরকারি মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মো. ইমতিয়াজ হোসেনের সঙ্গে।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, যে ভাষার জন্য আমরা আন্দোলন করেছি, তা প্রতিষ্ঠিত করতে না পারায় আমাদের ব্যর্থতাই বেশি। এই ভাষা আন্দোলন থেকেই স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছিলেন বাঙালিরা। সেই বাংলা ভাষার ব্যবহারে বিকৃতি ঘটানো হচ্ছে, যা গ্রহণযোগ্য নয়।
নতুন প্রজন্মকে বাংলার ইতিহাস ও ভাষার ব্যবহারবিধি সঠিকভাবে জানাতে সরকারের সঙ্গে প্রতিটি মানুষকেও পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২১২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৬
এসআর