ঢাকা, সোমবার, ১৩ মাঘ ১৪৩১, ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ২৬ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

রাগান্বিত হয়ে শিশু আলিফাকে হত্যা করেন বাবা আলাল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৬
রাগান্বিত হয়ে শিশু আলিফাকে হত্যা করেন বাবা আলাল ছবি: জিএম মুজিবুর- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ২২ মাসের শিশু আলিফার কান্নাকাটিতে রাগান্বিত হয়ে আলাল ওরফে দুদু (২০) তার নিজের মেয়ের গলা টিপে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।

 

আসামি মো. আলাল ও তার স্ত্রী সেবা বেগমের মধ্যে দাম্পত্য কলহ ছিল এবং একে অপরের প্রতি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অবিশ্বাস করতেন।

এ কারণে আলাল নিজের মেয়ে আলিফাকে নিয়ে স্ত্রী সেবা বেগমের কাছ থেকে দূরে কোথাও চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন।

কিন্তু আলিফা তার নানা-নানীর কাছে ফিরে যাওয়ার জন্য কান্নাকাটি করতে থাকায় এক পর্যায়ে আসামি রাগান্বিত হয়ে এ হত্যাকাণ্ডটি ঘটান।

গ্রেফতারকৃত আলালের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে ৠাব-২।

সোমবার (২৪ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৫ টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ৠাব-২ এর উপ-অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ আলী।

তিনি বলেন, গত ১৫ সেপ্টেম্বর দিনগত রাত ১টার দিকে রাস্তার পাশে একটি কলাবাগানে নিজের মেয়েকে হত্যা করার পর থেকে পলাতক ছিলেন আলাল।

১৭ সেপ্টেম্বর বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে স্থানীয় লোকজন ও রংপুরের কোতোয়ালি থানা পুলিশ তাজহাট এলাকার ভিআইপি কোল্ড স্টোরেজের পেছনের কলাবাগানটি থেকে শিশু আলিফার গলিত মরদেহ উদ্ধার করে। এ বিষয়ে রংপুরের কোতয়ালি থানায় নিহত শিশুটির নানী আফরোজা বেগম বাদিনী হয়ে হত্যা মামলা করেন।

এ ঘটনার পর থেকে ৠাবের গোয়েন্দা শাখা আসামি আলালকে গ্রেফতারের চেষ্টা শুরু করেন। জানা যায়, আসামি চট্টগ্রামে আছেন। কৌশলে তাকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়।

এরপর সোমবার (২৪ অক্টোবর) ভোর ৪টায় র‌্যাব-২ এর আভিযানিক দল তেজগাঁওয়ের তেজতুরী বাজারের একটি বাসা থেকে চাঞ্চল্যকর এই শিশু আলিফা হত্যার আসামি মো. আলাল ওরফে দুদুকে গ্রেফতার করে।

মো. আলাল ওরফে দুদুর বাবার নাম প্লান্টু মিয়া। তিনি রংপুরের কোতোয়ালি থানার কিষামত বিষু মানজাই গ্রামের বাসিন্দা।  

মেজর মোহাম্মদ আলী বলেন, আসামি মো. আলাল জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তিনি এবং তার স্ত্রী সেবা বেগম চট্টগ্রামের একটি গার্মেন্টসে চাকরি করেন। তারা গত ঈদ-উল আযহার ছুটিতে বাড়িতে আসেন। তাদের মেয়ে আলিফা (বয়স- ২২ মাস) রংপুরে তার নানা-নানীর কাছে পালিত হয়ে আসছিল।

মো. আলাল ১৫ সেপ্টেম্বর তার শ্বশুর বাড়িতে এসে তার মেয়েকে নিজের বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে যান। ওইদিন বিকেলেই শিশুটিকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি ফিরে আসার কথা থাকলেও  আসেননি। এ সময় থেকে আসামি মোবাইল নিজের ফোনটিও বন্ধ করে দেন বলেও জিজ্ঞাসাবাদে জানান।

র‌্যাব-২ এর উপ-অধিনায়ক বলেন, দাম্পত্য কলহ অথবা অন্য কোনো ঘটনার জেরে এ ধরনের একটি জঘন্য শিশু হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়ে থাকতে পারে। আরো অধিকতর তদন্তে প্রকৃত রহস্য উদ্‌ঘাটন করা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, ‘আমরা রংপুরের কোতোয়ালি থানায় বিষয়টি জানিয়েছি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসছেন। আসামি মো. আলাল ওরফে দুদুকে তার কাছে হস্তান্তর করা হবে’।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৮  ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৬
এসজেএ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।