রাজশাহী: সরকার ভোটের তারিখ ঠিক করে প্রজ্ঞাপন জারির পর, জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা দেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তাই এখনও অনেক সময় বাকি রয়েছে।
দলীয় মনোনয়ন পেতে রাজশাহীর সম্ভাব্য প্রার্থীরা দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন শীর্ষ নেতাদের কাছে। একই সঙ্গে চলছে নেতাদের কর্মী গোছানোর কাজও।
ফলে রাজশাহীতে জেলা পরিষদ নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। প্রথমবারের মতো এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে কে কে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বা কে পেতে পারেন- এ নিয়ে শুরু হয়েছে নানান জল্পনা-কল্পনা।
আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ ঘোষণা না দিলেও অনেকেই দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার লড়াইয়ে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ তালিকায় রয়েছেন বিভিন্ন দলের ডজনখানেক সিনিয়র নেতা। সেদিক থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা বিএনপি ও জাতীয় পার্টির চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ডিসেম্বরে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। যেখানে স্থানীয় সরকারের চার স্তরের (সিটি করপোরেশন, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ) জনপ্রতিনিধিরা ভোট দিয়ে তাদের নির্বাচিত করবেন। এই নির্বাচনী আচরণবিধি প্রণয়ন করছে ইসি।
রাজশাহীর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে অনেক উল্লেখযোগ্য নেতাই দলের মনোনয়ন চাইতে পারেন।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শোনা গেছে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা পরিষদের বর্তমান প্রশাসক মুক্তিযোদ্ধা মাহাবুব জামান ভুলু, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, জেলা কৃষক লীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম বাবুর নাম। তবে আগামী দিনে এর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র বলছে, গত সম্মেলনে জেলা সাধারণ সম্পাদকের শীর্ষ পদ পান সাবেক যুবলীগ নেতা আসাদুজ্জামান আসাদ। এরও আগে তিনি ছাত্রলীগের সভাপতিসহ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। গত সংসদ নির্বাচনে এই তরুণ নেতা রাজশাহী-৩ আসন থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন।
অন্যদিকে, মহানগর আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা মাহাবুব জামান ভুলু বর্তমানে জেলা পরিষদের প্রশাসকের দায়িত্বে রয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া ছাড়াও তিনি তার রাজনৈতিক জীবনে মহানগরের সভাপতিসহ দলের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তারই মূল্যায়ন হিসেবে বিগত সময়ে তাকে জেলা পরিষদ প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল বলে সবাই মনে করেন। দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হলে তিনি এবার নির্বাচনও করবেন বলে তার ঘনিষ্টজনরা জানিয়েছেন।
রবিউল ইসলাম বাবু দীর্ঘদিন থেকে রাজশাহী জেলা কৃষক লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি দ্বিতীয়বারের মতো জেলা কৃষক লীগের নির্বাচিত সভাপতি। এর আগে তিনি জেলা কৃষকলীগের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন। এবার তিনিও এই পদের জন্য মনোনয়ন প্রত্যাশী।
এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল দ্বিতীয়বারের মতো মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি তিনবার মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়া ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে জেলা পরিষদের নির্বাচনে প্রার্থী হতে দলীয় মনোনয়ন চাইতে পারেন বলে দলটির নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো দাবি করেছে। বর্তমানে তাদের প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি লিয়াকত আলী লিকু ও জেলা সভাপতি রফিকুল ইসলাম পিয়ারুল।
এদিকে, জেলা পরিষদের নির্বাচন নিয়ে রাজশাহী বিএনপি’র মধ্যে এখনও আওয়াজ ওঠেনি। তবে দল এ নির্বাচনে অংশ নিলে চারঘাট উপজেলার চেয়ারম্যান আবু সাঈদ চাঁদ ও মোহনপুর উপজেলার চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুস সামাদ দলীয় মনোনয়ন চাইতে পারেন বলে জানিয়েছেন তাদের ঘনিষ্টজনরা।
বিরোধী দল জাতীয় পার্টি থেকে জেলা সভাপতি ও সাবেক এমপি অধ্যাপক আবুল হোসেন, মহানগর সভাপতি সাইফুল ইসলাম স্বপন ও সম্পাদক আবু ইউসুফ সেলিমের নাম শোনা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৬
এসএস/আরআইএস/এসএনএস