ঢাকা: অভিবাসনের সঙ্গে নিরাপত্তার ঝুঁকির কোনো সম্পর্ক নেই বলে মন্তব্য করেছেন গ্রিসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সেক্রেটারি জেনারেল রাষ্ট্রদূত দিমিট্রিওস পারাসকেভোপোলাস।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) আয়োজিত ‘অভিবাসন এবং নিরাপত্তা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
দিমিট্রিওস পারাসকেভোপোলাস বলেন, অভিবাসনের সঙ্গে নিরাপত্তার ঝুঁকির কোনো সম্পর্ক নেই। যারা অভিবাসনের সঙ্গে নিরাপত্তার ঝুঁকিকে এক করেন রাজনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে সঠিক নন তারা।
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কামরুল আহসান, বিআইআইএসএস’র চেয়ারম্যান মুন্সি ফয়েজ আহমেদ, মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম আবদুর রহমান, রামুরু’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. তাসনিম সিদ্দিকিসহ বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক, সাবেক রাষ্ট্রদূত, সাবেক সচিব, শিক্ষাবিদ, গবেষক ও আমলারা উপস্থিত ছিলেন।
গ্রিসের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ইউরোপে আসা ১০ লাখ অধিবাসীর মধ্যে কিছু সংখ্যকের কারণে নিরাপত্তার ঝুঁকি থাকতে পারে। তবে তা হয়তো ১শ’ জনের মতো। এ কারণে অভিবাসনে সঙ্গে নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়টি জুড়ে দেওয়া বাস্তব সম্মত নয়।
এই কূটনীতিক বলেন, নিরাপত্তা এবং অভিবাসন সমস্যাকে এক করে দেখলে চলবে না, একটি দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা সে দেশের জনগণকে অভিবাসন সঙ্কটে ফেলে দেয়।
তিনি বলেন, শুধু নিরাপত্তায় নয় অভিবাসনের সঙ্গে দারিদ্র্য, মানুষের মর্যাদা, এবং গণতন্ত্র জড়িত। একই সঙ্গে অভিবাসন সমস্যায় আশ্রয় দানকারী দেশকে নিরাপত্তা সঙ্কটে ফেলে দেয় যাতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় নারী ও শিশুরা। যার পেছনে দায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা। এ সমস্যার সমাধানে সব রাষ্ট্রকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কামরুল আহসান বলেন, বর্তমান সময়ে অভিবাসন সবচেয়ে বেশি আলোচিত বিষয়। যার সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক প্রভাব এবং সমাজে অভিবাসীদের সম্পর্কের বিষয়গুলো চলে আসে। নিরাপত্তার ইস্যুতে অভিবাসনকে দেখলে ভূরাজনৈতিক, ম্যাটেরিয়াল উৎপাদন, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা- এ তিনটি ঝুঁকি সামনে চলে আসে। ফলে নিরাপত্তার কারণে বর্তমানে দেখা যাচ্ছে অভিবাসীরা অনেক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
অধ্যাপক ড. তাসনিম সিদ্দিকি বলেন, অভিবাসন নিয়ে নিরাপত্তার বিষয়টি হঠাৎ করে আসেনি। অভিবাসীরা দক্ষ হলে, অভিবাসনে নিরাপত্তাজনিত কোনো ঝুঁকি থাকে না। কারণ, এ অভিবাসীরা সেখানে অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। আর এ ধরনের অভিবাসনের জন্য উন্নত দেশগুলোকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। বর্তমানে রোহিঙ্গা ইস্যুটি বাংলাদেশের অভিবাসী নিয়ে নিরাপত্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে শুরুতে বিষয়টি বাংলাদেশ মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেই দেখতো।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৬
জেপি/ওএইচ/আরআই