বগুড়া: পোক্ত হয়ে উঠেছে ধানের শীষগুলো। ভারী হয়ে পড়েছে গাছের মাথাগুলো।
মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে সোনালী ফসল ধান। যেন সোনায় সোনায় ভরে গেছে মাঠের পর মাঠ। যা চোখের দৃষ্টি সীমাকেও ছাড়িয়ে যায়। কোথাও কোথাও সোনাঝরা ধানা কাটা শুরু হয়েছে। কৃষক গোলায় ভরতে শুরু করেছে সেই ধান। সোনালী স্বপ্নে বিভোর কৃষক।
তবে উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে বেশ টেনশনে রয়েছেন কৃষক। কারণ গেলো কয়েক বছরের রেকর্ড ভাল না। যদিও এবার ধানের দাম বেশি। কিন্তু ধানের এ বাজারমূল্য কতদিন থাকবে সেটাই তাদের মাথা ব্যথার কারণ। সবমিলিয়ে ধানের বাম্পার ফলনে কৃষক বেজায় খুশি।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) বগুড়ার বেশ কয়েকটি উপজেলার কৃষক ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপতরের কর্মকর্তাদের কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।
কৃষক আবু সাঈদ প্রায় ১০বিঘা জমিতে এবার কাটারিভোগ জাতের ধান চাষ করেছেন। ধানের ফলনও বেশ ভাল হয়েছে। তবে এ জাতের ধানে রোগাবালাই তুলনামূলক বেশি দেখা দেয়। এ জন্য শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জমিতে প্রয়োজনীয় মাত্রায় কীটনাশনক প্রয়োগ করতে হয়েছে। বিঘাপ্রতি ১৭-১৮মণ হারে ফলন হয়েছে।
কৃষক আবুল কালাম আজাদ পাঁচ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়ে ছিলেন। কাটা মাড়াই শেষে তিনি ১শ’ মণ ধান পেয়েছেন।
শহিদুল ইসলাম, বকুল হোসেন, মোখলেছুর রহমান, ইকবাল হোসেনসহ একাধিক কৃষক বাংলানিউজকে জানান, চলতি মৌসুমের ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বিগত বছরের চেয়ে রোগ-বালাইয়ের আক্রমণ ছিলো অনেক কম। আবহাওয়াও ছিলো অনেকটা অনুকূলে।
এসব কৃষকরা আরো জানান, তারা তাদের উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন। কেননা বিগত বছরগুলোর অভিজ্ঞতা খুব একটা ভালো না। টানা কয়েক বছর তাদের লোকসান গুনতে হয়েছে। তবে বর্তমানে ধানের বাজারদর ভাল রয়েছে। আর এরকম বাজার থাকলে ধানে এবার তারা লাভবান হবেন বলেও মনে করেন।
বর্তমানে প্রতিমণ শুকনো বিনা-৭ ৭২০-৭৫০ টাকা, ব্রি ধান-৪৯, ৫৭, ৬২ ও ৩৪ ৮৫০-৯০০ টাকা দরে জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে বেচাকেনা হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফরের উপ-পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি রোপা আমন মৌসুমে জেলায় ১লাখ ৮৪হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে উফশী ১লাখ ৭৭হাজার হেক্টর, স্থানীয় ৫হাজার ৫শ’ ও হাইব্রিড ২হাজার হেক্টর।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুর রহিম বাংলানিউজকে বলেন, চলতি মাসের প্রথম থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকায় আগাম জাতের ধান কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এ জেলায় পুরোদমে চলতি মৌসুমের ধান কাটা শুরু হবে।
এ কর্মকর্তা আরো বলেন, এবার এ জেলায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। গড়ে প্রতিবিঘা থেকে ১৭-১৮ মণ হারে ধানের ফলন আসছে। ধানের বাজারমূল্যও বেশ ভাল। সবমিলিয়ে এবার ধান চাষিরা ব্যাপক লাভবান হবেন বলেও কৃষি বিভাগের এই কর্মকর্তা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৬
এমবিএইচ/এসএইচ