ঢাকা, শনিবার, ১০ মাঘ ১৪৩১, ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২৪ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

এখনো গ্রেফতার হয়নি শিশু নির্যাতনকারী গৃহকর্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৬
এখনো গ্রেফতার হয়নি শিশু নির্যাতনকারী গৃহকর্ত্রী বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কুমিল্লা: কুমিল্লা নগরীতে ৬ বছর বয়সী গৃহকর্মী ইভা আক্তারের শরীরে গরম খুন্তির ছ্যাকা দেওয়া গৃহকর্ত্রী রোমানা আক্তার এখনো গ্রেফতার হয়নি।

নগরীর কুসিক ১ নম্বর ওয়ার্ডের কালিয়াজুড়ি মাজার সংলগ্ন মাহবুবুর রহমানের বাসায় শিশু গৃহকর্মী ইভা নির্যাতনের শিকার হয়।

২২ অক্টোবর (শনিবার) বিকেলে নির্যাতিত ইভা আক্তার বাসা থেকে পালিয়ে এলে নির্যাতনের বিষয়টি জনসম্মুখে আসে। পরে শিশুটিকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়।

শিশু নির্যাতনের ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় গৃহকর্ত্রী রোমানা আক্তারকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরে ২৪ অক্টোবর শিশুটির বাবা নুরু মিয়া এসে শিশুটিকে নিয়ে যায়।

কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার ইন্সপেক্টর সালাহ উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, শিশুটির বাবা এসে শিশুটিকে নিয়ে গেছে। গৃহকর্মী রোমানা আক্তার এখানো পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

কুমিল্লা পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসাইন বাংলানিউজকে জানান, নির্যাতিত শিশুটিকে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে চিকিৎসা ব্যয় ভার বহন করা হয়েছে। শিশু নির্যাতনের ঘটনায় একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে।

শিশু ইভা আক্তারকে ২ বছর বয়সে দেবিদ্বার উপজেলার বাসিন্দা দরিদ্র বাবা নুরু মিয়ার কাছ থেকে কিনে নেয় কালিয়াজুড়ি এলাকার মাহবুবুর রহমান ও তার স্ত্রী রোমানা আক্তার পলি। ইভার বয়স যখন ৪ বছর, তখন থেকেই গৃহকর্ত্রী ঘরের কাজকর্ম করতে ইভাকে বাধ্য করেন। ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, কাপড়-চোপড় পরিষ্কার, এমনকি রান্নাঘরেও কাজ করতো শিশু ইভা।

কাজে কোন রকম ভুল করলেই গৃহকর্ত্রী রোমানা আক্তার পলির নির্যাতন শুরু হতো। শিশুকে প্রায় সময় মারধর, খুন্তি আগুনে গরম করে হাতে-পায়ে ও পিঠে ছ্যাকা, রড দিয়ে আঘাত করা হত। এভাবে শিশুটির ওপর প্রায় সময় চলতো বর্বরোচিত নির্যাতন।

২২ অক্টোবর ওই বাসা থেকে পালিয়ে বের হওয়ার পর পুলিশের হেফাজতে নির্যাতিত শিশু ইভা বলে, গৃহকর্ত্রী পলি খালা আমাকে খুন্তি দিয়ে আগুনের ছ্যাকা দিয়েছে। কয়েকদিন আগে মাথায় রড দিয়ে আঘাত করেছে। আমি ওই বাসায় কাপড়-চোপড় ধোয়া ও ঘর পরিষ্কার করতাম। খালারা যখন বাড়ির বাইরে যায়, তখন আমাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখে যায়। আজ দড়ি ছিঁড়ে আমি বের হয়ে এসেছি।

ওই দিন রাতে কোতোয়ালি থানায় গৃহকর্ত্রী রোমানা আক্তার পলিকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়। ২৬ অক্টোবর দুপুরে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আসামিকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৬
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।