ঢাকা, শুক্রবার, ১০ মাঘ ১৪৩১, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

নির্যাতিত ৫ বছরের শিশুটিকে দেখে আঁতকে উঠছেন চিকিৎসকরাও

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৬
নির্যাতিত ৫ বছরের শিশুটিকে দেখে আঁতকে উঠছেন চিকিৎসকরাও

ঢাকা: দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ধর্ষণসহ পাশবিক নির্যাতনের শিকার পাঁচ বছরের শিশুটির চিকিৎসায় ৯ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।  

বুধবার (২৬ অক্টোবর) বেলা ১২টার দিকে শিশুটির শরীরে সফল অস্ত্রোপচার করে নিবিড় পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

 

তবে শিশুটির শারীরিক অবস্থা দেখে চিকিৎসকরাও আঁতকে উঠছেন।

মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর)  ভোরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢামেক হাসপাতালে  ভর্তি করা হয়। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস (ওসিসি) সেন্টারে রাখা হয়েছে তাকে।  

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘শিশুটির শরীরের নানা জায়গায় গভীর ক্ষত রয়েছে। জীবনহানির শঙ্কা না থাকলেও অঙ্গহানির একটা  সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করছি, যেন সে দ্রুত ভালো হয়ে ওঠে’।  

ঢামেক হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. ফেরদৌসী ইসলামকে প্রধান করে ৯ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বুধবার বেলা ১২টার দিকে শিশুটির শরীরে সফলভাবে অস্ত্রোপচার শেষে শিশুটিকে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন ডা. ফেরদৌসী।  

এর আগে চারটি বিভাগের সমন্বয়ে শিশুটির চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল বলে জানিয়েছেন ঢামেক হাসপাতালের ওসিসি’র তত্ত্বাবধায়ক ডা. বিলকিস বেগম। তিনি বলেন, ‘শিশুটিকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তির পর থেকেই ভালো চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার শিশুটিকে ফরেনসিক পরীক্ষার পর  নিউরোসার্জারি, পেডিয়াট্রিক সার্জারি, গাইনি ও পেডিয়াট্রিক বিভাগের অধীনে তার চিকিৎসা শুরু করা হয়েছিল। বুধবার অস্ত্রোপচারও করা হয়েছে’।  

দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার জমিরহাট তকেয়াপাড়া গ্রামে গত ১৮ অক্টোবর বর্বরোচিত ওই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। সকালে বাড়ির বাইরে খেলতে যাওয়ার পর শিশুটিকে পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেক খোঁজাখুঁজির পর রাত ১১টার দিকে পার্বতীপুর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন শিশুটির বাবা।  

পরদিন ১৯ অক্টোবর ভোর ৬টায় শিশুটিকে বাড়ির পাশের হলুদ ক্ষেত থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও মঙ্গলবার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢামেক হাসপাতালে আনা হয়।

এ ঘটনায় নির্যাতিতা শিশুর বাবা গত ২০ অক্টোবর প্রতিবেশী মাদকসেবি সাইফুল ইসলাম (৪১) ও আফজাল হোসেন কবিরাজকে (৪৭) আসামি করে পার্বতীপুর মডেল থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। ধর্ষক সাইফুল ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ।

শিশুটির সঙ্গে থাকা  স্বজনেরা অভিযোগ করেছেন, সাইফুলই বেলা ১২টায় শিশুটিকে হলুদ ক্ষেতটিতে নিয়ে যান। পরে আফজাল হোসেন কবিরাজকে নিয়ে যৌনাঙ্গ ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে  ধর্ষণ করেন। শিশুটির বুকে কামড় এবং গলাসহ শরীরে বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত করেন। নির্যাতনের পাশাপাশি শিশুটির শরীরে সিগারেটের ছ্যাঁকাও দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৬
এসটি/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।