ধুনট (বগুড়া): বগুড়ার ধুনট উপজেলায় দরিদ্রদের জন্য সরকারের বরাদ্দ দেওয়া ১০ টাকা কেজি দরের তিন মেট্রিক টন চালসহ দুই ব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার (২৬ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার বিলচাপড়ি বাজার এলাকায় মাসুম নামে এক ব্যবসায়ীর গুদাম থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটক ব্যক্তিরা হলেন- উপজেলার বিলচাপড়ি গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে লয়া মিয়া (৩৫) ও আব্দুল হালিমের ছেলে রবিন আহম্মেদ (২২)।
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের বিলচাপড়ি বাজার এলাকায় তালিকাভুক্ত দরিদ্র কার্ডধারীদের মধ্যে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি করেন নিয়োগপ্রাপ্ত ডিলার। সে চাল স্থানীয় এক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে দরিদ্রদের কাছ থেকে ২৮ টাকা কেজি দরে কিনে মাসুমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে (গুদাম) মজুদ করেন।
বুধবার (২৬ অক্টোবর) সকালে ব্যবসায়ী মাসুমের গুদাম থেকে পাচারের উদ্দেশে ১০ টাকা কেজি দরের চাল বস্তা ভর্তি করছিলেন ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সদস্যরা। এসময় ধুনট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে অন্যান্য ব্যবসায়ীরা কৌশলে সটকে পড়লেও লয়া মিয়া ও রবিনকে আটক করে পুলিশ। পরে গুদামে রক্ষিত প্রায় তিন মেট্রিক টন চাল জব্দ করা হয়।
গুদামের মালিক বিলচাপড়ি গ্রামের মাসুম বাংলানিউজকে বলেন, তার গুদাম ঘরটি বিলচাপড়ি গ্রামের আব্দুল হামিদ, আব্দুল আলিম, খলিলুর রহমান ও আব্দুল মজিদের কাছে ভাড়া দেওয়া। তারা কার্ডধারীদের কাছ থেকে ১০ টাকা কেজি দরের চাল কিনে গুদামে মজুদ করেছেন।
আটক লয়া মিয়া ও রবিন বাংলানিউজকে বলেন, তারা কুলি শ্রমিকের কাজ করেন। ব্যবসায়ী আব্দুল হামিদ, আব্দুল আলিম, খলিলুর রহমান ও আব্দুল মজিদের কথা মতো এ চালগুলো বস্তা ভর্তি করছিলেন। এ বিষয়ে এর বেশি তারা জানেন না।
ব্যবসায়ী আব্দুল হামিদ বাংলানিউজকে বলেন, এ চাল ক্রয়ের সঙ্গে তিনি জড়িত নন। তারপরও অন্যান্য ব্যবসায়ীরা শত্রুতামূলকভাবে তার নাম বলেছেন। তবে পুলিশের জব্দকৃত চালগুলো ১০ টাকা কেজি দরের চাল বলে জানান তিনি।
ধুনট উপজেলার ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র বৈদ্য বাংলানিউজকে জানান, থানা পুলিশ এ বিষয়টি তাকে অবগত করেছেন। আইনি প্রক্রিয়ার জন্য বিষয়টি নিয়ে খাদ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, বিলচাপড়ি গ্রামের কয়েকজন ব্যবসায়ী ১০ টাকা কেজি দরের চাল কার্ডধারীদের কাছ থেকে কিনেছেন। ঘটনাস্থল থেকে দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ধুনট উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাফিউল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, দরিদ্রদের জন্য সরকারি বরাদ্দকৃত ১০ টাকা কেজি দরের চাল খোলা বাজারে ব্যবসায়ীদের কেনাবেচা করার কোনো বৈধতা নেই। এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকলে অভিযুক্ত ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৬
আরবি/আরএ