ঢাকা: তারেক মাসুদ ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার নুরপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাল্যকালের কিছু সময় মাদ্রাসায় কেটেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই তিনি বাংলাদেশের চলচ্চিত্র আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে পড়েন। সেইসঙ্গে দেশ-বিদেশে চলচ্চিত্র বিষয়ক অসংখ্য কর্মশালা এবং কোর্সে অংশ নেন।
১৯৮৫ সালে তিনি প্রথম প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেন। এটি প্রখ্যাত বাংলাদেশি চিত্রকর এসএম সুলতানের জীবনীভিত্তিক ‘আদম সুরত’।
তারেক মাসুদ ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসেন `মাটির ময়না` (২০০২) এবং মুক্তির গান (১৯৯৫) চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে। বিশেষ করে, মাটির ময়নার জন্য অসংখ্যা আন্তর্জাতিক পুরস্কার পান। এগুলোর মধ্যে ২০০২ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিটিকস অ্যাওয়ার্ড ও পরিচালনার জন্য তিনি পুরস্কার পান।
এছাড়াও তার নির্মাণ করা প্রামাণ্যচিত্র এবং চলচ্চিত্রের মধ্যে, সোনার বেড়ি (১৯৮৫) আদম সুরত (১৯৮৯), মুক্তির গান (১৯৯৫), মুক্তির কথা (১৯৯৬), মাটির ময়না (২০০২) অন্তর্যাত্রা (২০০৬) রানওয়ে (২০১০) ও নরসুন্দর।
মাটির ময়না প্রথম বাংলাদেশি সিনেমা হিসেবে অস্কার প্রতিযোগিতায় বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।
এডিবনার্গ, মন্ট্রিল, কায়রো উৎসবে মাটির ময়না প্রদর্শিত হয়। পাশাপাশি ২০০২ সালে মারাকেশ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা চিত্রনাট্যের পুরস্কার লাভ করে। ২০০৩ সালে করাচি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও সেরা ছবির পুরস্কার লাভ করে। ২০০৪ সালে ছবিটি ব্রিটেনের ডিরেক্টরস গিল্ড পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়।
তারেক মাসুদ বাংলাদেশের বিকল্প ধারার চলচ্চিত্র নির্মাতাদের সংগঠন বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। ১৯৮৮ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত প্রথম আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র উৎসবের কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়া তিনি যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং এশিয়ার বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি কয়েকটি সাময়িকী ও পত্রিকায় চলচ্চিত্র বিষয়ে লেখালেখি করেন।
তার স্ত্রী ক্যাথেরিন মাসুদ একজন মার্কিন নাগরিক। ক্যাথেরিন এবং তারেক মিলে ঢাকায় একটি চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন। যার নাম অডিওভিশন। চলচ্চিত্র নির্মাণ ছাড়াও তারেক মাসুদের আগ্রহের বিষয় ছিল লোক সঙ্গীত।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০১১