ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ আশ্বিন ১৪৩১, ০১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

স্বর্ণের ক্রেস্ট নয়, এবার নগদ অর্থ!

শাহেদ ইরশাদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০১৭
স্বর্ণের ক্রেস্ট নয়, এবার নগদ অর্থ!

মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ মুক্তিযুদ্ধ সম্ম‍াননায় দেওয়া ক্রেস্টে স্বর্ণের পরিমাণ কম থাকা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার পর এবার আর ক্রেস্টে স্বর্ণ দেওয়া হচ্ছে না। ক্রেস্টের সঙ্গে দেওয়া হবে নগদ অর্থ। মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের পরিবারকে দেওয়া মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননায় এই অর্থ দেওয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীতে যখন ভারত সফরে যাবেন তখন দিল্লিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর শহীদদের পরিবারের সদস্যদের হাতে এই সম্মাননা তুলে দেবেন। আগমী ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে এই অনুষ্ঠান হতে পারে বলে জানা গেছে।

প্রাথমিকভাবে সাতটি পরিবারের সদস্যদের হাতে নগদ ৫ লাখ রুপির চেক, ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। পরবর্তীতে সাতজনসহ মোট ১ হাজার ৭শ’ সদস্যের পরিবারকে সম্মাননা দেবে বাংলাদেশ সরকার।

এর আগে ২০১১ থেকে ২০১৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অবিস্মরণীয় অবদানের জন্য বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনায়ক, রাজনীতিবিদ, দার্শনিক, শিল্পী-সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, বিশিষ্ট নাগরিক ও সংগঠনকে সম্মাননা দিয়েছিল সরকার।

সাত পর্বে দেওয়া ওই সম্মাননার তৃতীয় পর্বে ৬১ ব্যক্তি ও সংগঠনের জন্য তৈরি করা ক্রেস্টে যে পরিমাণ স্বর্ণ থাকার কথা ছিল, তা দেওয়া হয়নি। একই সঙ্গে ক্রেস্টে রুপার বদলে দেওয়া হয় পিতল, তামা ও দস্তা মিশ্রিত শংকর ধাতু।
 
মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আবেদনে জাতীয় মান সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) পরীক্ষায় এমন প্রমাণ পাওয়া যায়। সম্মাননায় দেওয়া ক্রেস্টে স্বর্ণের পরিমাণ নিয়ে সমালোচন‍ার তিন বছর পর আবারও সম্মাননা দিতে যাচ্ছে সরকার।

এবার দেওয়া হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধে নিহত ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর শহীদ সদস্যদের পরিবারকে। আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ দেওয়া সম্মাননায় ক্রেস্ট দেওয়া হলেও তাতে স্বর্ণ থাকবে না। সঙ্গে নতুন করে দেওয়া হবে নগদ অর্থ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় সে দেশের নির্বাচিত সাতটি শহীদ পরিবারের সদস্যদের আনুষ্ঠানিকভাবে এ সম্মাননা দেওয়া হবে। শেখ হাসিনার কাছ থেকে সম্মাননা নেওয়ার পরেই ভারতের সাতটি নির্ধারিত তারিখ, সময় ও স্থানে একই ধরনের অনুষ্ঠান হবে। সেখানে বাকি শহীদ পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা দেওয়া হবে।

এজন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ভারতের দিল্লিস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ‘মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’ প্রদানের অনুষ্ঠানের সময়সূচি এবং সম্মাননা গ্রহণকারীর সংখ্যা প্রেরণ করলে পররবর্তী ব্যবস্থা নেবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এজন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে ১শ’ ১৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।

ভারত সরকার সশস্ত্র বাহিনীর শহীদ সদস্যদের পরিবারের আত্মীয়-স্বজনের একটি তালিকা চূড়ান্ত করে বাংলাদেশ হাইকমিশনে দিলে সেখান থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। ইতিমধ্যে আটটি ক্রেস্ট তৈরি করা হয়েছে। সেখান থেকে সাতটি সম্মাননা দেওয়া হবে। একটি সংরক্ষণ করা হবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে।

অ্যাকাউন্ট পেমেন্ট চেকের মাধ্যমে ৫ লাখ রুপি দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও  জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অনাপত্তি নিতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় আর্থিক মঞ্জুরিপত্র জারির মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তরের বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওপর ন্যস্ত করলে হিসাব মহানিয়ন্ত্রক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমাদের সব ধরনের কার্যক্রম সম্পন্ন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে ন্যস্ত করা হয়েছে। তারা ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে দিন তারিখ ঠিক করবে। তবে অনুষ্ঠানটি ফেব্রুয়‍ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে হতে পারে।

আগে এ ধরনের সম্মাননায় স্বর্ণের ক্রেস্ট দেওয়া হলেও এবার দেওয়া হচ্ছে না কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে মোজাম্মেল হক বলেন, আর স্বর্ণের ক্রেস্ট দেওয়া হবে না। সাধারণ ক্রেস্ট ও নগদ অর্থ দেওয়া হবে। ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর শহীদ সদস্যদের পরিবারকে ৫ লাখ রুপি করে দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০০৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০১৭
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।