ঢাকা, বুধবার, ১ মাঘ ১৪৩১, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

রেলক্রসিং নয় যেন মৃত্যুকূপ

রীনা আকতার তুলি, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৭
রেলক্রসিং নয় যেন মৃত্যুকূপ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রেললাইন পারাপার হচ্ছেন পথচারীরা

ঢাকা: রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোডে উড়াল সেতু নির্মিত হওয়ার পর থেকে রেললাইন অবাধে পারাপার হচ্ছেন পথচারীরা। দুর্ঘটনাও ঘটছে অহরহ। কিন্তু রেললাইনের উপর দিয়ে যান চলাচল না থাকায় নেই কোনো সিগনাল।

ঘড়ির কাটায় বিকেল ৪টা। সরেজমিনে রোববার (০৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কুড়িল বিশ্ব রোডের রেল রেললাইনে গিয়ে দেখা যায়, কমলাপুর স্টেশন থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছেড়ে যাওয়া প্রতিটি ট্রেন এই ক্রসিং অতিক্রিম করে।

উড়াল সেতু হওয়ার পর থেকে রেললাইনের উপর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ থাকায় এই ক্রসিংয়ে ট্রেন যাওয়ার সময় কোনো ধরণের সিগনাল দেওয়া হয় না। এর ফলে প্রায় ঘটে ট্রেন দুর্ঘটনা।
 
সরেজমিনে আরো দেখা যায়, রেললাইন ঘেঁষে গড়ে উঠেছে প্রায় ২০টির মত অস্থায়ী দোকান। চলছে চা বিক্রি থেকে শুরু করে কাপড়, জুতা, শরবত, কাবাব বিক্রিসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা। এছাড়া ক্রসিংয়ের পাশে হকাররা মাইক বাজিয়ে বিক্রি করছেন নানা ধরনের ওষুধ। আর ট্রেন আসলেও মাইকের শব্দে ট্রেন আসার শব্দ পাচ্ছেন না পথচারীরা। যার ফলে ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। এছাড়াও অবৈধ দোকানের কারণে রেললাইন পারাপারে যথেষ্ট বেগ পেতে হয় পথচারীদের।
 রেললাইনের পাশে ‍অবৈধ দোকানপাট
রেল ক্রসিংয়ের পাশে চায়ের দোকানে কথা হয় মনির নামে একজনের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এই ক্রসিং পার হয়ে যেতে হয় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, বাড্ডা, রামপুরাসহ পূর্ব প্রান্তের বিভিন্ন জায়গায়। যান চলাচল বন্ধ হওয়ার পর থেকে ট্রেন আসলে কোনো সিগন‍াল থাকে না। ফলে প্রায়ই মানুষ ট্রেনে কাটা পড়ে। গত সপ্তাহেও একজন ট্রেনে কাটা পড়েছেন।
 
রেললাইন পার হচ্ছিলেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাদিয়া ইসলাম। তিনি বাংলানিউজকে বলেন,  এই রেল লাইনে ট্রেন আসলে কেউ বুঝতে পারে না। কারণ এখানে কোনো সিগনাল নেই। এখানে একটি সিগনালের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
 
তিনি বলেন, এভাবে রেললাইন পারাপারে  অনেক ঝুঁকি রয়েছে। রেললাইনের পাশে প্রচন্ড শব্দ থাকায় ট্রেন আসলেও বোঝা যায় না।
 রেললাইনের পাশে ‍অবৈধ দোকানপাট
ক্রসিংয়ের বিষয়ে খিলক্ষেত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, কুড়িলে ওই রেল ক্রসিংয়ে ‍পুলিশ দায়িত্ব পালন করে। হকারদের উচ্ছেদ করলে আবারো বসে পড়ে। অনেক সময় মানবিক কারণে আমরা কিছু বলি না।
 
রেলপথে দুর্ঘটনা  বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ট্রেনে কোনো পথচারী কাটা পড়লে এর দায়িত্ব প্রশাসন নেবে না। কারণ ওই ক্রসিংয়ে পারাপার নিষেধ।
 
 
রেল ক্রসিং পরাপারের বিষয়ে রেলের বিভাগীয় প্রকৌশলী (১) মহিউদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন,  কুড়িলে উড়াল সেতু হওয়ার পর থেকে ওই ক্রসিংয়ে পারাপার নিষেধ করা হয়েছে। এমনকি উচুঁ দেওয়ালও দেওয়া হয়েছে। এখানে পারাপার সম্পূর্ণ নিষেধ। কেউ দুর্ঘটনার শিকার হলে দায় প্রশাসন নেবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১৭
আরএটি/বিএস

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।