রোজিনা নিয়মিত ফোনে অন্য কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতেন বলেও ধারনা করেন তিনি। এ নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো।
গত ৩০ নভেম্বর রাতে রাজধানীর দক্ষিণ যাত্রাবাড়ী এলাকায় ২২৬/এ তালাবদ্ধ একটি বাসার দ্বিতীয় তলা থেকে রোজিনা আক্তার (৩০) নামে এক নারীর গলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর ৬ মাস আগে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসাটি ভাড়া নেন তারা।
ঘটনার পর থেকেই ফয়সাল পলাতক ছিলেন। পরদিন ১ ডিসেম্বর যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
ঘটনার ২১ দিন পর গত ১৮ ডিসেম্বর ফয়সালকে গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর, প্রাথমিক দোষ স্বীকারের ভিত্তিতে আদালতে ফয়সালের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কে এম আজিজুল হক বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনার পর থেকে ফয়সাল পলাতক ছিলেন। পরে মোবাইল ট্র্যাকিং করে চাঁদপুর সদর থানার লোহারপুল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ফয়সাল পেশায় একজন সবজি বিক্রেতা।
জবানবন্দিতে ফয়সাল জানান, রোজিনাকে বিয়ের পর বাসাটি ভাড়া নেন তারা। এ বসায় প্রায় ৫-৬ মাস ধরে বসবাস করে আসছিলেন। তবে প্রায়ই ব্যবসার কাজে ঢাকার বাইরে থাকতেন তিনি। এ সুযোগে রোজিনা অন্য কারো সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন বলে সন্দেহ হয় তার। প্রায়ই মোবাইল ফোনে কথা বলতেন দেখা যেতো রোজিনা। এ নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো।
গত ২৭ নভেম্বর তাদের মধ্যে ঝগড়ার এক পর্যায়ে রোজিনার পেটে লাথি মারেন ফয়সাল। এতে রোজিনা খাটের ওপর পড়ে অজ্ঞান হয়ে গেলে ভয় পেয়ে যান ফয়সাল। তারপর রোজিনাকে সেই অবস্থায় রেখে বাসার বাইরে থেকে তালা দিয়ে পালিয়ে যান ফয়সাল।
এসআই আজিজুল বলেন, ৩০ তারিখ ওই ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ বের হলে বিষয়টি ভবন মালিক পুলিশকে জানান। খবর পেয়ে সেদিন রাত ১২টার দিকে দরজার তালা ভেঙে রোজিনার গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড শেষে ঘাতক ফয়সালকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
নিহত রোজিনার বাবা মৃত আক্কাস মোল্লা। তার গ্রামের বাড়ি মাগুরার মোহাম্মপুরের ডুমুরশিয়ায়। পোশাক কারখানায় চাকরি করে এমন পরিচয়ে বাসাটি ভাড়া নেন এই দস্পতি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১৭
পিএম/বিএস