গত ৩০ জানুয়ারি বিকেলে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার গোলাপবাগে নিজ বাসার সামনে খুন হয় বিভোর (১২)। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, খেলার সময় হঠাৎ করে প্রতিবেশী যুবক আল আমিন বিভোরের পেটে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
ঘটনার দিন বিভোরের বাবা নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে আল আমিন, তার ছোট ভাই আরমিন ও বাবা আবদুল মান্নান মুন্সির বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
একই দিন রাতে জয়পুরহাটে পালিয়ে যাওয়ার সময় টাঙ্গাইলে বঙ্গবন্ধু সেতুর চেকপোস্ট থেকে আল আমিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে ১ ফেব্রুয়ারি হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেয় আল আমিন।
জবানবন্দির বরাত দিয়ে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ জানায়, কয়েক বছর আগে বিভোরের বাবা নজরুল ইসলাম আল আমিনের বাবা মান্নান মুন্সির কাছ থেকে জায়গা কিনে বাড়ি করেন। জায়গার দাম কম দিয়েছে উল্লেখ করে নজরুলের কাছে আরো ৮ লাখ টাকা দাবি করেন মান্নান। সেই টাকা না দেওয়ায় দুই পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। নজরুলের পরিবারের উপর ক্ষোভ থেকেই আল আমিন এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়।
পুলিশ আরও জানায়, দীর্ঘদিনের এই বিরোধের কারণে নজরুলকে শিক্ষা দিতে তার ছেলে বিভোরকে ছুরিকাঘাত করে আল আমিন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কে এম আজিজুল হক বাংলানিউজকে বলেন, বাড়ির জায়গা নিয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে শিশু বিভোরকে খুন করা হয়েছে বলে আল আমিন আদালতে জবানবন্দিতে জানিয়েছে। হত্যায় ব্যবহৃত চাকুটি তার কাছেই থাকত।
আল আমিন মাদকাসক্ত ছিলো এবং তার বিরুদ্ধে এর আগে মারামারিসহ থানায় তিনটি মামলা ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঘটনার পর প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা শুনে আমরা নিশ্চিত হই আল আমিনই খুন করেছেন। পরে তার বিরুদ্ধে অন্য মামলার ডকুমেন্টস থেকে তার ছবি পেয়ে সম্ভাব্য সব জায়গায় দিই। ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই আল আমিনকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। জবানবন্দি রেকর্ড শেষে আদালত আল আমিনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অন্য দুই আসামির মধ্যে আল আমিনের ছোট ভাই আরমিনকে দু'দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আরমিন জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। তবে, সেসব যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। মামলার অন্য আসামি মান্নান মুন্সিকে গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১৭
পিএম/আরআর/আরআই