ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ব্যবসায় কৌশলী হকাররা!

মানসুরা চামেলী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৭
ব্যবসায় কৌশলী হকাররা! ব্যবসায় কৌশলী হকাররা-ছবি মানসুরা চামেলী

ঢাকা: রাজধানীর গুলিস্তান। ফুটপাত-রাস্তা জুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে হকারদের দোকান। ছাতা, শার্ট, জুতা-স্যান্ডেল, গেঞ্জি, খেলনা ও ব্যাগসহ বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন হকাররা। তারা হাঁকছেন- ‘এক দাম দুইশো, লইয়্যা যান দুইশো’।

গুলিস্তানের স্টেডিয়াম মার্কেট, গোলাপশাহ মাজার, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ ও পাতাল মার্কেট সংলগ্ন সড়কের পুরোটাই হকারদের দখলে। কয়েকদিন আগে যেখানে দফায় দফায় হকার উচ্ছেদ অভিযান চলেছে।

এরই মধ্যে সেসব জায়গা আবার চলে গেছে হকারদের দখলে।

বিষয়টি পরিষ্কার হয় রবিন নামে এক হকারের সঙ্গে কথা বলে। তিনি বলেন, আমাদের ব্যবসা করার কোনো অনুমতি নাই। কোনো ঠিকানা ন‍াই। যখন-তখন উঠায় দিতে পারে। অফিস ছুটি হয়েছে বলে একটু বসেছি। এছাড়া শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি হওয়ায় ওই সময়েও দোকান নিয়ে বসি।

ব্যবসায় কৌশলী হকাররা-ছবি-মানসুরা চামেলীবারবার উচ্ছেদের মুখে কৌশলী হয়ে এভাবে ফুটপাত-রাস্তা বন্ধ করে ব্যবসা চালাচ্ছেন রাজধানীর হকাররা। এ ক্ষেত্রে তারা বেছে নিয়েছেন শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটির দিনকে। এছাড়া অফিস ছুটির পর বিকেল ৫টা থেকে আবারও ফুটপাত ও রাস্তায় দোকান নিয়ে বসছেন তারা।

 তবে সিটি করপোরেশনের অনুমতি না নিয়ে নিজেরাই সময় ঠিক করে এভাবে ফুটপাত-রাস্তা দখল করে ব্যবসা চালাচ্ছেন হকাররা। এতে করে ওই সময় সড়কগুলোতে প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। পথচারীদেরও হাঁটাচলা করতে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, রাজধানীর গুলিস্তান, মতিঝিল, পল্টন, মিরপুর এলাকায় শুক্র ও শনিবার ও অন্যান্য দিনগুলোতে বিকেল ৫টার পর হকাররা পণ্যের পসরা সাজান। এ সময় তারা ফুটপাত-রাস্তা দখল করে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করেন।

এবার খুব কৌশলে বসেছেন হকাররা। বেশির ভাগ হকার ডালি, বস্তা, ছালা বিছিয়ে দোকান পেতে বসেছেন। অনেকেই অস্থায়ী দোকান দিলেও বস্তা প্রস্তুত করে রেখেছেন যাতে পুলিশ এলে খুব দ্রুত সরে যেতে পারেন।  

মতিঝিলের শাপলা চত্বরের সংলগ্ন রাস্তা বন্ধ করে বেশ কয়েকজন হকারকে জিনিসের দোকান সাজিয়ে বসে থাকতে দেখা গেল। তবে তিন মাস আগে এখানে হকারদের রমরমা ব্যবসা দেখা গেছে, সে তুলনায় বর্তমানে হকারের সংখ্যা কম।

ব্যবসায় কৌশলী হকাররা-ছবি-মানসুরা চামেলী
বারবার উচ্ছেদের পরও রাস্তা বন্ধ করে ব্যবসা করার কারণ জানতে চাইলে সালাউদ্দিন নামে এক শার্ট বিক্রেতা বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের তো চলতে হবে। মানুষের অসুবিধা যাতে না হয় তাই ছুটির দিনে ও অফিস ছুটির পর ব্যবসা করছি। সিটি করপোরেশন হকারদের কথা বিবেচনা করে এই সময়গুলো বসার অনুমতি দিলেই পারে। আমাদের কথা না ভাবলে তো ভিক্ষা করা ছাড়া গতি থাকবে না।

গুলিস্তান এভিনিউয়ের ফুটপাত থেকে পণ্য কেনেন পুলিশ কর্মকর্তা সাগর। তার কাছে অনুমতি ছাড়া ব্যবসার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনের অনুমতি আছে না কি নাই- আমরা জানি না। অফিস ছুটির দিন হওয়ায় হকাররা বসতে পেরেছেন। তা না হলে উঠিয়ে দেওয়া হতো। আমরা প্রতিদিনই হকার উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছি।

গত নভেম্বরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়রের ফুটপাত দখলমুক্ত করার ঘোষণার পর থেকে হকাররা উচ্ছেদের মুখে রয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৭
এমসি/এমজেএফ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।