এতে বেশ খুশি শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তারা। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বকেয়া সব পাওনা পরিশোধ করবে নতুন মালিক পক্ষ।
বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মিলের প্রশাসনিক ভবনে শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তাদের চূড়ান্ত বিলের অনুকূলে চেক তুলে দেন মিলের নতুন কর্ণধার ও সাবিল গ্রুপের পরিচালক (প্রশাসন) শাহনুর রহমান শামীম।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের নির্বাহী কর্মকর্তা ইসমাইল মৃধা, সাবিল গ্রুপের পরিচালক আব্দুল হান্নান তালুকদার, নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেপের উপদেষ্টা ও সাবিল গ্রুপের পরিচালক মাওলানা মো. মুজ্জাম্মিল হক, পরিচালক (অর্থ) আব্দুল্লাহীল মাহমুদ. এ্যাজাক্স জুট মিলের মহাব্যবস্থাপক (অর্থ ও প্রশাসন) আব্দুল আলিম, বেসরকারি পাট ও বস্ত্র কল শ্রমিক ফেডারেশনের মহাসচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম সবুজ, সাবিল গ্রুপের তথ্য কর্মকর্তা এস এস শোহান, কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান, মেহেদী হাসান সুজন, শ্রমিক নেতা শেখ আমজাদ হোসেন, মো. সাইফুল ইসলাম, হুমায়ুন কবির, শেখ তৈয়বুর রহমান প্রমুখ।
শ্রমিকদের উদ্দেশে মিলের নতুন কর্ণধার সাবিল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এম এ মান্নান তালুকদার বলেন, আমরা দেনার ভারে নুয়ে পড়া মিলটির দায়ভার নিয়েছি। আমাদের ওয়াদা অনুসারে শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তাদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ করলাম। দ্রুততম সময়ের মধ্যে অন্যান্য সেক্টরের পাওনাও পরিশোধ করবো। আমরা শিগগিরই মিলে উৎপাদন শুরু করবো। মিলে উৎপাদন শুরু হলে এখানে ৫ হাজারেরও বেশি লোকের কর্মসংস্থান হবে। যা দেশ ও জাতির কল্যাণে ভূমিকা রাখবে।
মিল পরিচালনার ক্ষেত্রে শ্রমিকদের স্বার্থকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়ারও ঘোষণা দেন তিনি।
১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে সরকারি-বেসরকারি মিলে চারবার মিলটির মালিকানা হস্তান্তর হয়। কিন্তু কোনো মালিকপক্ষ শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা বুঝিয়ে দেয়নি। পরে ২০১৪ সালের ২১ মে বন্ধ হয়ে যায় মিলটি। এতে দুই হাজারের বেশি শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েন। ফলে মানবেতর জীবন শুরু হয় মিলটির শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের।
পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর সাবিল গ্রুপ নামে একটি গ্রুপ মিলটির দায়িত্বভার নেয়। এরপর ১৪ জানুয়ারি ২০১৬ মিল চত্বরে শ্রমিকদের নিয়ে এক জনসভার মাধ্যমে মিলের দায়িত্ব আনুষ্ঠানিকভাবে বুঝে নেয় সাবিল গ্রুপ।
ওই জনসভায় মিলের নতুন কর্ণধর সাবিল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মান্নান তালুকদার শ্রমিকদের সব পাওনা পরিশোধের ঘোষণা দেন। সেই ঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তাদের পাওনা হিসাব করে চূড়ান্ত বিলের চেক দেওয়া শুরু করে গ্রুপটি। শ্রমিকদের এ বিল পরিশোধ করা হলে মিলটি দায়মুক্ত হবে বলে জানায় নতুন পরিচালনা পর্ষদ।
শ্রমিকদের চূড়ান্ত বিল পরিশোধ করায় নতুন পরিচালনা পর্ষদকে অভিনন্দন জানিয়েছে মিলটির সিবিএ, নন সিবিএ ও বেসরকারি পাট ও বস্ত্র কল ফেডারেশনের নেতারা।
মিলের শ্রমিক শাহ আলশ বলেন, যখন ২০১৪ সালে মিলটি বন্ধ হয়েছিলো। তখন নিজেদের ন্যায্য পাওনা পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু এ মালিক মিলটি নেওয়ার পরে আমরা আশার মুখ দেখেছি। এর আগেও বেশ কয়েকবার আমাদের টাকা দিয়েছেন তিনি। আর এবার আমাদের সব পাওনা বুঝে দিচ্ছেন। এখন আমরা স্বচ্ছল জীবন যাপন করতে পারবো।
মিলটি আবার চালু হলে মিলে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করারও আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৭
এমআরএম/টিআই