ঢাকা, শনিবার, ৪ মাঘ ১৪৩১, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

অতিষ্ঠ হয়ে মাদকাসক্ত স্বামীকে খুন, দাবি স্ত্রীর 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৭
অতিষ্ঠ হয়ে মাদকাসক্ত স্বামীকে খুন, দাবি স্ত্রীর 

ঢাকা: ‘প্রতি রাতেই মাতাল হয়ে বাসায় ফিরতো স্বামী ওহিদুল ইসলাম স্বপন (৫৫)। এ নিয়ে প্রতিদিনই স্ত্রী মৌসুমী ইসলাম নাহারের (৪০) সাথে বাগবিতণ্ডা হতো। মৌসুমীকে প্রায়ই মারধরও করতো স্বপন।

গত মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে একই কারণে তাদের মধ্যে আবার ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে স্বপন বটি দিয়ে মৌসুমীকে মারতে যায়।

মৌসুমী হাত দিয়ে বটির কোপ ঠেকিয়ে বেঁচে যায়।
 
ভোর রাতে স্বপনকে আবারও গাঁজা সেবন করতে দেখে মৌসুমী চেঁচামেচি শুরু করে। তখন স্বপন স্ত্রীর দিকে ইট ছুড়ে মারে। পরে স্ত্রী মৌসুমী পাল্টা ইট ছুড়লে স্বপনের মাথায় লাগে।

মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মেঝেতে পড়ে গেলে ইট দিয়ে মাথা থেতলে স্বামীকে খুন করে মৌসুমী। ’ 

স্বামীকে হত্যা মামলায় গ্রেফতার স্ত্রী মৌসুমী আদালতে জবানবন্দিতে এসব কথা বলেন। বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসানের উপস্থিতিতে ১৬৪ ধারায় এ জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
 
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর মালিবাগ আবুজর গিফারী কলেজের পাশে ১৬৩ নং ৫তলা ভবন থেকে স্বপনের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের দায়ে নিহতের স্ত্রী মৌসুমীকে আটক করা হয়। নিজের ৫ তলা ওই বাড়ির চতুর্থ তলায় স্বপন স্ত্রী ও পুত্রকে নিয়ে থাকতেন। তাদের ১৭ বছর বয়সী একমাত্র ছেলে নটরডেম কলেজে পড়াশোনা করছে।
 
এ ঘটনায় বুধবার রাতে নিহতের ছোটভাই ইমদাদুল ইসলাম দোলন বাদী হয়ে শাহজাহানপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
 
শাহজাহানপুর থানা সূত্রে জানা যায়, স্বপন আগে টেলিভিশনে গান গাইতেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে কিছুদিন কাজ করার পর বর্তমানে বেকার ছিলেন তিনি।
 
এদিকে, মামলার এজাহারে দোলন ‌উল্লেখ করেন, ২৩ বছর আগে স্বপন ও মৌসুমীর বিয়ে হয়। মৌসুমীর গ্রামের বাড়ি নরসিংদী এলাকায়। বুধবার আনুমানিক তিনটার দিকে দোলনকে তার স্ত্রী ফোন করে ভাইয়ের খুনের খবর জানায়।
 
স্বপনের মাথার বাম পাশে কানের উপর, কপাল ও নাক ইট দিয়ে থেঁতলে দেওয়া হয়েছে বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়। ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে ৬টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
 
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহজাহানপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আবু জাফর হাওলাদার বাংলানিউজকে বলেন, আসামি মৌসুমীর জবাববন্দি রেকর্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। তাদের ছেলে ও পরিবারের ‍অন্য সদস্যদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে। তদন্ত শেষে খুনের কারণ সম্পর্কে পরিষ্কার জানা যাবে।
 
মঙ্গলবার রাতে প্রথম দফা ঝগড়ার সময় মৌসুমীকে বটি দিয়ে কোপ দেওয়া হয়েছিল কি না? এ প্রসঙ্গে এসআই আবু জাফর বলেন, মৌসুমীর হাতে কোপের চিহ্ন রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৭
পিএম/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।