শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় বিকেলে জার্মানির মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে ‘ক্লাইমেট সিকিউরিটি: গুড কপ, ব্যাড কপস’ শীর্ষক এক প্যানেল আলোচনায় বক্তৃতা করছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
ডয়েচে ভেলের চিফ পলিটিক্যাল করেসপন্ডেন্ট মেলিন্ডা ক্রেইনের সঞ্চালনায় আলোচনায় ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট সাউলি নিনিস্তো, সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারগোট ওয়ালস্টোম, যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর সেলডন হোয়াইটহাউস অংশ নেন।
প্রধানমন্ত্রী বিশ্বনেতাদের সামনে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন একটি বৈশ্বিক ইস্যু এবং এর সমাধান অবশ্যই বৈশ্বিকভাবে হতে হবে। এজন্য প্রয়োজন সম্মিলিত এবং কার্যকর পদক্ষেপ।
“কোনো একটি দেশের অসহযোগিতা সবার জন্য হুমকি হতে পারে। সেজন্য আমরা অবশ্যই নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নেবো। ”
জলবায়ু পরিবর্তন নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সম্পদের ওপর চাপ বাড়ে। এতে অস্থিতিশীলতা, সহিংসতা ও সংঘাত তৈরি হতে পারে- যা মূলত জাতীয় নিরাপত্তা বিপন্ন করে তুলতে পারে।
খাদ্য নিরাপত্তাকে প্রধান উপাদান হিসেবে চিহ্নিত করে শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে খাদ্য উৎপাদন এবং মান উভয়ই মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেজন্য জলবায়ু পরিবর্তন সহিষ্ণু চাষাবাদ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা প্রয়োজন।
পানি নিরাপত্তাকে দ্বিতীয় উপাদান হিসেবে তুলে ধরে পানির জন্য তহবিল গঠনে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং অন্যান্য কারণে জীবন ও জীবিকার জন্য বিশুদ্ধ ও নিরাপদ পানির সংকট তীব্র হয়ে উঠছে।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিবাসনকে তৃতীয় উপাদান হিসেবে তুলে ধরে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে লাখ লাখ মানুষ অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিকভাবে অভিবাসনে বাধ্য হচ্ছে। এটি সরাসরি সামাজিকভাবে সম্পদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে, এর ফলে নতুন নিরাপত্তা উদ্বেগ তৈরি হচ্ছে।
শেখ হাসিনা জানান, বাংলাদেশ উন্নয়ন কার্যক্রমে কার্বন নিঃসরণ নিম্নমাত্রায় নিয়ে আসার লক্ষ্য অর্জনে সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা নিয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব অর্থায়নে ২০০৯ সালে ৪শ’ মিলিয়ন ডলারের ‘জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড গঠন’ করেছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বিশ্বনেতাদের বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের এ সাফল্যে অনেক দেশ তা অনুসরণ করছে।
এসময় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় প্রায় ৯শ’ কিলোমিটার উপকূলজুড়ে কোস্টাল গ্রিন বেল্ট প্রকল্প, দেশব্যাপী প্রায় ৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন বাড়িতে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্থাপনসহ প্রভৃতি কার্যক্রমের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৭
এইচএ/
আরও পড়ুন
** জার্মানি থেকে দেশের পথে প্রধানমন্ত্রী
** আঙ্গেলা মেরকেলের সঙ্গে শেখ হাসিনার বৈঠক
** ‘ক্ষতিগ্রস্তরা বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন’
** জার্মানি পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
** নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিতে জার্মানির পথে প্রধানমন্ত্রী
** রাতে জার্মানি যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী