তাই আজ যেন বাঁধনহারা ছেলেমানুষির কাছে হার মেনেছে নিরাপত্তা বেষ্টনী। কিছুক্ষণের জন্য হলেও যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে দুই বাংলা।
এই দিনটির জন্য বহু মানুষ বছর ভর অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় ছিলেন। ভিন দেশের বন্ধুদের ওই একটি দিনই কাছ থেকে ছুঁয়ে দেখবার সুযোগ মেলে সাধারণ মানুষের।
সকাল থেকে সীমান্তে হাজার জনতার ঢল। দুই দেশের ভাষাপ্রেমীরা গেয়ে চলেছেন- সবক’টা জানালা খুলে দাও না। যেন কাঁটাতারের বেড়া ছিঁড়ে ফেলার গোপন আর্জি।
একে অপরকে বুকে জড়িয়ে ধরে কেউ আপন মনে কেঁদে চলেছেন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা ফুল দিচ্ছেন ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যদের। চলছে রক্তদান কর্মসূচি। কাঁটাতারের দূরত্বটাই যেন মুছে গেছে।
বাংলাদেশি যুবক জড়িয়ে ধরছেন হিন্দিভাষী বিএসএফ জওয়ানকে। কেউবা শার্টে ব্যাজ পরিয়ে দিচ্ছেন। বুঝে-না বুঝেই জওয়ানেরও চোখে জল। তাদের অপলক দৃষ্টিতে শুধুই বিস্ময় আর শ্রদ্ধা।
সালাম,বরকত, রফিকদের স্মরণে তৈরি অস্থায়ী শহীদ মিনারের বেদী শ্রদ্ধার ফুলে ভরে গেছে। শ্রদ্ধা জানাতে আসা নারী, পুরুষ ও শিশুরা ফুল ছড়িয়ে দিচ্ছেন।
যুবকদের অনেকেরই মাথায় কালো ব্যান্ড, একুশের স্মারক। শিশুদের গালে লাল-সবুজ রঙে আঁকা পতাকা দেখে ভুল হয়ে যায় কে কোন দেশি। গানের পাশাপাশি চলছে নাটক, কবিতা।
২০০২ সালে বেনাপোল সরগরম সংগীত একাডেমি ও ভারতের বনগাঁ একুশ উদযাপন কমিটি একুশ উপলক্ষে দুই বাংলার যৌথ কর্মসূচির আয়োজন শুরু করে। প্রথম বছরের যে সাড়া মিলেছিল তা প্রত্যাশাকেও ছাপিয়ে গিয়েছিল। সেই আবেগ আজও বনগাঁর পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্তকে ভাসিয়ে নিয়ে চলেছে।
দুই বাংলার ভাষা উৎসবের অনলাইন মিডিয়া পার্টনার দেশের শীর্ষ অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। এর আয়োজক বেনাপোল ও বনগাঁ পৌরসভা। ইভেন্ট অর্গানাইজার হিসেবে রয়েছে কাঠ পেন্সিল। দুপুর ২টায় এ কর্মসূচি শেষ হয়।
** বেনাপোল দুই বাংলার ভাষাপ্রেমীদের বরণে প্রস্তুত নোম্যান্সল্যান্ড
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৭
এজেডএইচ/এসআই