মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ভোরে নিজেদের তৈরি শহীদ মিনারের বেদীতে তারা পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে। এর আগে সোমবার দিনভর ওই বিদ্যালয়ের ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা তৈরি করে এ শহীদ মিনার।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রত্যন্ত এ অঞ্চলে ১৯৬৭ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর দেশ স্বাধীন হলে ১৯৭৩ সালে এটি জাতীয়করণ করা হয়। বিদ্যালয়টির দু’টি ভবনের একটি জরাজীর্ণ। দুই কক্ষবিশিষ্ট অন্য ভবন এবং জরাজীর্ণ ভবনেই ঝুঁকি নিয়ে চলে পাঠদান। যেকোন সময় ভবনটি ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এদিকে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার ৫০ বছরেও নির্মাণ করা
হয়নি শহীদ মিনার।
দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ কোমলমতি শিক্ষার্থীরা জানায়, বিদ্যালয়ে কোন শহীদ মিনার নেই বলে তারা জাতীয় দিবসগুলোতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারে না। এজন্য নিজেরাই বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কলা গাছে কাগজ মুড়িয়ে প্রতীকী শহীদ মিনার তৈরি করেছে।
পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সাব্বির, অনিক ও রাকিবা, আমিন, রুবা বলে, শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তারা সবাই শহীদ মিনারে যাবে। কিন্তু তাদের বিদ্যালয়ে যেহেতু শহীদ মিনার নেই। তাই তারা কয়েকজন শিক্ষার্থী মিলে কলা গাছের এ শহীদ মিনার বানিয়েছে।
বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সৈয়দ ওসমান বলেন, শহীদ মিনার মূলত একটা প্রতীক মাত্র। তাই ইটের হোক আর কলা গাছেরই হোক, শ্রদ্ধা নিবেদনটাই মূখ্য। এটা করতে পেরে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা অনেক তৃপ্ত হয়েছে বলে আমরা লক্ষ্য করেছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিরিন সুলতানা বলেন, সরকারি অনুদান না পাওয়ায় অবকাঠামোসহ শহীদ মিনার তৈরি করা সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা নিজেরাই কলা গাছ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে সেখানে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিয়েছে।
সোমবার শহীদ মিনার তৈরির খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও শিক্ষা কর্মকর্তা স্কুল পরিদর্শন করেছেন। তারা বলেছেন, অচিরেই বিদ্যালয়ের ভবন ও শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
জানতে চাইলে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নওশাদ মাহমুদ বলেন, যেসব বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই সেগুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।
তবে দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জরুরি ভিত্তিতে ভবন নির্মাণসহ শহীদ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৭
আরএ