তিনি বলেছেন, পদ্মার চরে সবরকম সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন ক্রীড়াপল্লি আমরা নির্মাণ করে দেবো। এছাড়া পরিকল্পনা আছে সুবিশাল অলিম্পিক কমপ্লেক্স গড়ে তোলার।
বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে চতুর্থ রোল বল ওয়ার্ল্ড কাপ-২০১৭-এর সমাপণী অনুষ্ঠানে বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশে রোল বল খেলাটি জনপ্রিয় করতে সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে রোল বল খেলাটি খুব পরিচিত খেলা নয়। বাংলাদেশের আনাচে-কানাছে এ খেলা যেন ছড়িয়ে পড়তে পারে সে সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
তিনি বলেন, সময়ের বিবেচনায় রোল বল খেলাটির পরিধি অনেক প্রসারিত হয়েছে। যা ভারত শুরু করলেও এটি এখন ইউরোপ, আফ্রিকা, উত্তর আমেরিকা এবং মধ্য প্রাচ্যের কিছু দেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশ রোলার স্কেটিং ফেডারেশন প্রথমবারের মতো ঢাকায় ১৭ থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি ‘চতুর্থ রোল বল ওয়ার্ল্ড কাপ- ২০১৭’ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। এবারই প্রথমবারের মতো এই খেলায় সর্বোচ্চ সংখ্যক ৩৯টি দেশ ও সর্বোচ্চ ৬২৫ জন ক্রীড়াবিদ অংশগ্রহণ করছেন।
বিপুল সমারোহে এমন বর্ণাঢ্য আয়োজনের জন্য প্রধানমন্ত্রী সংগঠকদের ধন্যবাদ জানান।
বাংলাদেশ সফলভাবে আন্তর্জাতিক সব আয়োজন সম্পন্ন করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন খেলাধুলায় বাংলাদেশ ভালো আয়োজন করছে। খেলাধুলায় অংশগ্রহণেও যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে। আমরা ইতোপূর্বে আইসিসি ওয়ার্ল্ড কাপ, এশিয়ান কাপ, সাফ গেমস্, আন্তর্জাতিক টেবিল টেনিস ও বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক ফুটবলকাপসহ নানা আয়োজন সফলতার সঙ্গে করেছি। এবার রোল বল বিশ্বকাপও তাই।
বিভিন্ন খেলাধুলায় বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীদের এগিয়ে যাওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশ যেমন অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তেমনি খেলাধুলাতেও আমরা অগ্রসর হয়েছি।
খেলাধুলার প্রসারে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, সবাই যাতে খেলাধুলায় আরও উৎসাহী হয়; সেজন্য প্রতিটি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম, জেলাগুলোতে স্টেডিয়ামের সঙ্গে সঙ্গে সুইমিং পুল, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাসহ নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা আমরা সৃষ্টি করে যাচ্ছি। যাতে খেলাধুলার প্রতি আমাদের ছেলেমেয়েরা আরও বেশি আগ্রহী হয়।
খেলাধুলা ও সংস্কৃতি চর্চায় অংশগ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই ছেলেমেয়েরা সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক থেকে দূরে থাকবে। এজন্য খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক চর্চার বিকল্প নেই।
আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়নের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
আগত বিদেশি অতিথিদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা নিজের দেশে গিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে অ্যাম্বাসেডরের ভূমিকা পালন করবেন। বাংলাদেশে দেখে গেলেন; যা দেখেছেন ফিরে গিয়ে তা সম্পর্কে বলবেন।
তিনি বলেন, এই খেলাধুলার মধ্যে আমি মনে করি, একটা দেশের খেলোয়াড়দের সঙ্গে অন্য দেশের খেলোয়াড়দের একটা মতবিনিময়ের সুযোগ হয়, একটা বন্ধুত্বের সূচনা হয়।
পরে প্রধানমন্ত্রী বিজয়ীদের হাতে ট্রফি তুলে দেন।
চতুর্থ রোল বল ওয়ার্ল্ড কাপে পুরুষ ও নারী ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি নেয় ভারত এবং নারী ও পুরুষ ক্যাটাগরিতে রানার্স আপ ট্রফি নেয় ইরান।
টুর্নামেন্ট সেরা হন বাংলাদেশের ১৩ বছরের কিশোর দ্বীন ইসলাম হোসেন হৃদয়। হৃদয় আগে বাদাম বিক্রি করতো।
শুরুতে ৩৯টি দেশের খেলোয়াড়রা নিজ নিজ দেশের জাতীয় পতাকা নিয়ে রোলার স্কেটিং ফ্লোরে জড়ো হন।
অনুষ্ঠানে গান ও দলীয় নৃত্যের মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়। এছাড়া রোল বল ও রোলার স্কেটিং খেলার বিভিন্ন কৌশল তুলে ধরেন খেলোয়াড়রা।
প্রতিযোগিতার প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক এবং প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ ক্রীড়া সংস্থাগুলোর আর্থিক বরাদ্দ অত্যন্ত তিনগুণ বাড়ানোর আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেণ শিকদার, আন্তর্জাতিক রোল বল ফেডারেশনের সভাপতি পেনিয়া কাবিঙ্গে এবং সাধারণ সম্পাদক রাজু ডাবাদে প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৭/আপডেট ১৬২৬
এমইউএম/আইএ