রঙিন আলো মেখে মায়া ছড়াচ্ছে চরপাড়া মোড়ের টাইম স্কয়ার। বেশ কোলাহলমুক্ত অনবদ্য সৌন্দর্যের ঘুমন্ত এ নগরীতে এসবের বাইরেও আবার চোখে পড়ে শ্রমজীবী মানুষের জীবন সংগ্রাম।
ফলে ঘুমকে বিসর্জন দিয়েই জেগে থাকে ওরা। মধ্যরাত থেকেই বাজারে কর্মব্যস্ততা চোখে পড়ে আড়তদার ও বেপারীদের। মাঠের আসল নায়ক চাষিদের কাছ থেকে সবজি কিনে আড়তে ভিড়তে শুরু করেন বেপারীরা।
নিশুতি রাতে কর্মমুখর মানুষের পদচারণার পাশাপাশি আবার রেলস্টেশনের ফুটপাতে কুণ্ডুলি পাঁকিয়ে শুয়ে থাকা ঘরহীনদের অসহায়ত্বের চিত্রও ফুটে উঠে।
বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত ৩টা থেকে ৪টা নাগাদ ময়মনসিংহ নগরীর পাটগুদাম ব্রিজ মোড়, চরপাড়া, স্টেশন রোড, গাঙ্গিনারপাড়, নতুন বাজারসহ বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেলো এমন চিত্রের।
ময়মনসিংহ রেলওয়ে জংশন স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের এখানে-সেখানে ছড়িয়ে বিভোর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে আছে ছিন্নমূল মানুষেরা। রেলের কু ঝিকঝিক শব্দও ওদের ঘুমে বিরক্ত তৈরি করে না। জীবনের রুঢ় বাস্তবতায় প্ল্যাটফর্মের বিছানায় শোয়া মাত্রই ঘুম। ঝড়-বৃষ্টির রাত হলেই কেবলমাত্র বিপদ। বৃষ্টির ঝাপটা ভিজিয়ে দেয় ওদের। নগরীর স্টেশন রোড এলাকা পার হতেই সারি সারি চেয়ার-টেবিল চোখে পড়ে। এগুলো মূলত ফুটপাতের দোকান।
দিনের বেলায় এরা জীবিকা নির্বাহে এখানে বিভিন্ন রকম পণ্যের ব্যবসা করেন। খানিক পথ এগুতেই বিভিন্ন ভ্যান থেকে নামছে গ্রামের টাটকা সবজি।
সবজি বোঝাই ভ্যান থেকে সবজি আনলোডের কাজ করছেন আব্দুস সালাম (৪০) নামে এক শ্রমজীবী। কুলির মতো তারা হরেক রকমের সবজি নিয়ে যাচ্ছেন আড়তে।
বেপারীরা এ মেছুয়া বাজারে নিয়ে এসেছেন এসব সবজি। আলাপ হলো বেপারী শফিকুল ইসলামের সঙ্গে (৩৫)। বাড়ি তারাকান্দা উপজেলায়।
সবজি হিসেবে নিয়ে এসেছেন ডাটা। স্থানীয়ভাবে এ সবজি ‘ডেঙ্গা’ নামে পরিচিত। প্রতি বোঝা (১৫ হালি) বিক্রি হবে ৮০ টাকা। আড়ত থেকেই এ সবজি চলে যাবে জেলার ছোট-বড় বিভিন্ন বাজারে। আবার যাদের আড়ত নেই তারা রাস্তার ওপরে বসে পড়েছেন। আসল আড়তদাররাও আপত্তি তুলছে না।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৭
এমএএএম/এএটি/এসএইচ