ঢাকা, রবিবার, ১৯ মাঘ ১৪৩১, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

জয় বাংলা কনসার্টে মাতলো আর্মি স্টেডিয়াম

শেখ জাহিদুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৯ ঘণ্টা, মার্চ ৭, ২০১৭
জয় বাংলা কনসার্টে মাতলো আর্মি স্টেডিয়াম মঞ্চে গায়ক/ ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: জয় বাংলা কনসার্টে তারুণ্যের উল্লাসে আরও একবার মাতলো পুরো আর্মি স্টেডিয়াম। গানের ফাঁকে ফাঁকে আতশবাজির ঝলকানি স্টেডিয়ামকে করছিলো আরও বেশি উজ্জীবিত।

আর অপরদিকে মঞ্চে বহমান সুরের ধারা অন্যদিকে গ্যালারি জুড়ে চলতে থাকে তারুণ্যের উল্লাস।

মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে শিক্ষার্থীদের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশননার মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ কনসার্ট।

আর শেষ হয় মঙ্গলবার মধ্যরাত ১টার পর। কনসার্টে এবারও শোনানো হয় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের সেই ভাষণ। এরপর এক এক করে প্রত্যেকটি ব্যান্ড মুক্তিযুদ্ধকালের আগুনঝরা গানগুলো ছাড়াও নিজেদের গান গেয়ে শোনায়।

স্টেডিয়ামে জয় বাংলা কনসার্টটি উপভোগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুল ও শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।

জয় বাংলা কনসার্টে অংশ নেয় দেশের শীর্ষ ৯টি ব্যান্ড। এর মধ্যে ছিল ওয়ারফেইজ, চিরকুট, নেমেসিস, শিরোনামহীন, স্পন্দন ৭২, আর্বোভাইরাস, লালন, ক্রিপটিক ফেইট এবং শুন্য ব্যান্ড।

প্রত্যেকটি দলের গান শেষ হওয়ার পর বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের খণ্ড খণ্ড চিত্র দেখানো হয়। আর তাতেই তরুণ প্রজন্ম ফিরে পায় তাদের নতুন শক্তি। আর তারুণ্যের মুখে মুখে তখন বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ভাষণ। জয়বাংলা কনসার্টে দর্শক সারিতে ছিলেন শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক /ছবি: বাংলানিউজশুরুতেই মঞ্চে গান পরিবেশন করে ব্যান্ড স্পন্দন ৭২। ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ গান নিয়ে শুরু হয় তাদের পরিবেশনা।   এরপর হিসাবি মহাজন, স্কুল খুইলাছেরে মওলা স্কুল খুইলাছে, ওই পাগলা তোর পাগলি কই।

এরপর মঞ্চে উঠে ক্রিপটিক ফেইট ব্যান্ড প্রথমেই তারণ্যকে জাগিয়ে তুলতে গেয়ে শোনায়, ওঠো বীর বাঙালি,তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দিবোরে, চোখের জল, রাঙিয়ে দাও আমার স্বপ্নকে আর আক্রমণ দিয়ে শেষ করে।

জন্মভূমির অপমান আর সইবো না গানটি দিয়ে মঞ্চে আগমন ঘটে আর্বোভাইরাস ব্যান্ডের। তারপর একে একে শোনায় ওরে শোন রে তোরা শোন,আয় আয় বন্ধুরা ফিরে আয় ও এখনই নামবে আলো দিয়ে শেষ করে।

হঠাৎ মঞ্চে শূন্য ব্যান্ডের সঙ্গে আগমন ঘটে এলিটা করিমের। ব্যান্ডটি গেয়ে শোনায়,সোনাদিয়া বান্ধাইয়াছি ঘর ও শত আশা গানগুলো। আর নেমেসিসের সঙ্গে সংঙ্গীত পরিবেশন করেন জেফার। সব মিলিয়ে পুরো আর্মি স্টেডিয়াম যখন মাতোয়ারা তখন মঞ্চে আসে শিরোনামহীন। তারা গেয়ে শোনায়, জন্ম আমার ধন্য হলোসহ কয়েকটি গান। এরপর বিরতি দিয়ে রক্ত চাই গানটি দিয়ে মঞ্চে গান পরিবেশন করে লালন। তখন পুরো স্টেডিয়াম জুড়ে রক্ত চাই রক্ত চাই ঝলকানি।
 
এবার ঘোষণা দিয়ে মঞ্চে আসেন চিরকুট। তখন আর্মি স্টেডিয়াম যেন পুরো একটি আলোর মিছিল। প্রথমেই গেয়ে শোনালেন নোঙর তোলো সময় যে হলো। এরপর গেয়ে চললেন একে একে এ শহর প্রাণের শহর ঢাকা রে, মরে যাব রে কি অসহায় আমিসহ কয়েকটি গান। মঞ্চের সামনে শ্রোতাদের ভিড়/ ছবি: বাংলানিউজ

মঞ্চ থেকে চিরকুট বিদায় নিলেও তখন সবার নজর মঞ্চের স্ক্রিনে। কেননা মঞ্চে কবি নির্মুলেন্দ গুনের কবিতা এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, কে রোধে তাহার বজ্রকণ্ঠ ধ্বনি গণসমুদ্রের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তার অমর কবিতা খানি, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতা সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম।

এর একটু পরেই মঞ্চে এলেন ওয়ারফেইজ ব্যান্ড। তারা শোনালেন হে সমাজ, বাংলার ঘরে ঘরে মুক্তির আলো জ্বলছে, মহারাজা, জয় বাংলা বাংলার জয়। তবে আর নয় আঁধার গানটি শেষ গান হলেও প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের অনুরোধে ‘একটি ছেলে’ গানটি দিয়েই শেষ করে ব্যান্ডটি।  

পুরো অনুষ্ঠান জুড়ে গানের ফাঁকে লাল আর নীল আলোকরশ্মির লেজার শো যেন কনসার্টকে আরো বেশি রাঙিয়ে তুলছিলো। সেই সঙ্গে মঞ্চের ব্যাকড্রপে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের সাদাকালো চিত্রের রঙিন রূপায়ন যেন নতুন আলোর বার্তা দিয়ে গেলো।

বাংলাদেশ সময়: ০৫১৫ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৭
এসজে/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।