ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ মাঘ ১৪৩১, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

টাঙ্গাইলে জোড়া হত্যার ঘটনার রহস্য উন্মোচন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৭
টাঙ্গাইলে জোড়া হত্যার ঘটনার রহস্য উন্মোচন

টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলে যুবলীগের দুই কর্মী হত্যা করে তাদের মরদেহ গুমের ঘটনার রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার ঘনিষ্ঠ সহযোগী যুবলীগ নেতা ও তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী মোর্শেদ তার দল নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে মরদেহ গুম করেন।

ঘটনার প্রায় পাঁচ বছর পর এ মামলায় গ্রেফতার হওয়া দুই আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এই তথ্য জানিয়েছেন। এই দুই আসামির মধ্যে শাহাদত হোসেন সাধু (৪৫) বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) ও খন্দকার জাহিদুল ইসলাম (৩৮) শনিবার (১১ মার্চ) টাঙ্গাইল জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

তাদের দুই জনের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রুপম কান্তি দাশ।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ১৬ জুলাই সকালে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়নের যুবলীগ কর্মী মোহাম্মদ শামীম (২৮) ও মামুন মিয়া (২৫) বাড়ি থেকে টাঙ্গাইল শহরের উদ্দেশ্যে বের হন। এরপর থেকে তারা নিখোঁজ হন। এ ব্যাপারে শামীমের মা আছিয়া খাতুন বাদি হয়ে পরদিন ১৭ জুলাই টাঙ্গাইল সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

এরপর নিখোঁজ মামুনের বাবা আব্দুল আজিজ বাদি হয়ে ২০১৩ সালের ৯ জুলাই টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন। মামলায় মোর্শেদসহ তার দলের ১৩ জনকে আসামি করা হয়। পরবর্তীতে মামলার তদন্তের দায়িত্ব জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) দেওয়া হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অশোক কুমার সিংহ বাংলানিউজকে বলেন, এ মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি খন্দকার জাহিদুল ইসলাম ও শাহাদত হোসেনকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদকালে তারা এ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। পরে দুই জনেই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

আদালত সূত্র জানায়, জাহিদুল ও শাহাদত জবানবন্দিতে জানিয়েছেন মামুন ও শামীম হত্যার কিছুদিন আগে সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার ভাই জাহিদুর রহমান খান কাকন তার অফিসে মোর্শেদ, স্বপন, জাহিদ, সবুজসহ কয়েকজনকে ডেকে নেন। জাহিদুর তাদের পাঁচ লাখ টাকা ও একটি পিস্তল দিয়ে বেতকা কলেজগেট এলাকার জেলা যুবদলের সভাপতি খন্দকার আহমেদুল হক শাতিলকে হত্যার ব্যবস্থা করতে বলেন। হত্যার কাজে প্রয়োজনীয় আরও টাকা ও অস্ত্র মোর্শেদকে দিতে বলেন। জাহিদুরের কাছ থেকে মোর্শেদ দায়িত্ব পেয়ে মামুন ও শামীমকে ডেকে আনেন শাতিলকে হত্যার জন্য। এই হত্যার জন্য দুইটি মোটরসাইকেল, সাত লাখ টাকা ও দুইটি রিভলবার (একটি জাহিদুরের দেওয়া) মামুন ও শামীমকে দেন। কিন্তু তারা হত্যা না করায় পরবর্তীতে তাদের দুই জনকেই মোর্শেদের অফিসে ডেকে এনে হত্যা করে লাশ বাসাইলের নথখোলায় নিয়ে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৭
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।