প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার (২০ মার্চ) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে ‘নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা আইন, ২০১৭ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, এটি অনেক দিনের প্রত্যাশিত আইন।
তিনি বলেন, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রীর নেতৃত্বে ২৭ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের জাতীয় উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। তাদের মূল দায়িত্ব নগর উন্নয়ন অধিদফতর বা তাদের ছোট পরিষদকে সুপারভাইজ করা। উপদেষ্টা পরিষদ পলিসি ইস্যুতে কাজ করবে।
গণপূর্ত সচিবের নেতৃত্বে ২৫ সদস্যের নির্বাহী পরিষদ থাকবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, উপদেষ্টা পরিষদের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা নির্বাহী পরিষদের কাজ। উপদেষ্টা পরিষদের কাছে পরিকল্পনাগুলো সুপারিশসহ উপস্থাপন করতে হবে।
তিনি বলেন, নিবন্ধন ও ভূমি ব্যবহার ব্যবস্থানায় ছাড়পত্র নিতে হবে। ভূমি ব্যবহারের জন্য ছাড়পত্র নিতে হবে। সব সরকারি-বেরকারি সংস্থা, ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান যাদের কার্যক্রম প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা এবং ভূমি ব্যবহার ব্যবস্থাপনার সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত সেসব সংস্থা, ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে উপদেষ্টা পরিষদের কাছ থেকে ছাড়পত্র নিতে হবে।
উপদেষ্টা পরিষদ ছাড়পত্রে দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোনো কর্তৃপক্ষকেও ক্ষমতা দিতে পারবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
আইনে কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইনের অধীন প্রণীত পরিকল্পনা, বিধি, কোনো আদেশ, নির্দেশ মোতাবেক কাজ না করলে বা কোনো ব্যক্তি, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান এগুলো লঙ্ঘন করে কাজ করলে সর্বোচ্চ ৫ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড এবং সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
গ্রামের এলাকায় কাজ করতে হলেও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ছাড়পত্র নিতে হবে বলে জানান শফিউল।
তিনি বলেন, বিভিন্ন নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ তাদের এখতিয়ারভুক্ত এলাকাগুলোতে নিজেরা অনুমোদন দেবে। পৌরসভা ও স্থানীয় পরিষদ নিজেদের গৃহীত পরিকল্পনা অনুযায়ী উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সম্পাদন করবে। ইতোপূর্বে তারা যেসব কাজ করছে তা এই আইনের মধ্যে গণ্য হবে।
ভূমির ব্যবহার ও উন্নয়নে এখনও ছাড়পত্র নিতে হয় জানিয়ে তিনি বলেন, এই আইন হলেও ওগুলো অব্যাহত থাকবে। অনেক বিষয়ই আইনে নেই। বিধিতে সেগুলো পরিষ্কার করা হবে।
“ছাড়পত্র নেওয়ার বিষয়টি গ্রাম পর্যায়ে চলে যাবে, এটি পুরো দেশ কাভার করবে। সারা দেশের যে কোনো জমি ব্যবহার করতে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন লাগবে। ”
তিনি বলেন, ল্যান্ড ইউজকে প্রতিহত করার জন্য এটা করা হচ্ছে। যে ল্যান্ড ইউজটা আমরা অপব্যবহার করছি সেটাকে ঠেকানো এটার অন্যতম উদ্দেশ্য। প্ল্যানিং প্রোসেজে যেন আমরা ল্যান্ড ইউজ করি।
“জমির মিস ইউজ যেন কম হয়, প্রতি বছর এক শতাংশ কৃষি জমি কমে যাচ্ছে, সেটা ঠেকানো দরকার। ”
গ্রামে বাড়ি করতে হলেও কি ছাড়পত্র নিতে হবে- এমন প্রশ্নে শফিউল আলম বলেন, এখনও ছাড়পত্র নেওয়ার নিয়ম আছে। এখন গ্রামে একটা বাড়ি করতে গেলে ইউনিয়ন পরিষদের অনুমতি নিতে হয়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নেওয়া হয় না।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৭/আপডেট: ১৬২৫ ঘণ্টা
এমআইএইচ/এমজেএফ