ঢাকা, বুধবার, ২১ মাঘ ১৪৩১, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

ভবনে ফাটল, দুর্ঘটনার ঝুঁকি মাথায় তবু বসবাস

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৭
ভবনে ফাটল, দুর্ঘটনার ঝুঁকি মাথায় তবু বসবাস টিনশেড বাড়িটির দেয়ালে এমন ফাটল দেখেও সেখানে থাকছেন বাসিন্দারা। ছবি: সুমন শেখ

ঢাকা: রাজধানীর সবুজবাগ থানার আহাম্মদবাগের ১৪৫/১৪ নম্বর ইটের দেয়ালের টিনশেড বাড়ি। স্কুল ভবনের মতো ৪ সারিতে ২৮টি কক্ষ। একটি সারিতে কেবল ১১টি রুম, বাকি তিনটিতে ১৭টি কক্ষ। পুরো বাড়িতে থাকে ব্যাচেলররা। মোট ৫০ জন। কেউ শিক্ষার্থী, কেউবা চাকরিজীবী।

এই বাড়ি দেখতে গিয়েই আঁতকে উঠতে হলো। টিনশেড বাড়িটার প্রত্যেক সারির দেয়ালগুলোতে ফাটল।

বিশেষত পেছনের অংশে। একাধিক সারির দেয়াল হেলেও পড়েছে। নির্ঘাত যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। টিনশেড বাড়িটির দেয়ালে ফাটল, হেলে পড়েছে এক অংশ।  তারপরও এখানে থাকছেন বাসিন্দারা।  ছবি: সুমন শেখকিন্তু এই ফাটল দেখেও বাসিন্দারা ছাড়ছেন না ভবনটি। ঝুঁকি মাথায় রেখেই এখানে বসবাস করছেন কেবলই স্বল্প ভাড়া এবং সহজে অন্য কোথাও ব্যাচেলর বাসা না পাওয়ার কারণে। সেজন্য তত্ত্বাবধায়কের বক্তব্য, ‘বাসিন্দারা ভবন ছাড়ছেন না বলে এর ভাঙার কাজেও হাত দেওয়া যাচ্ছে না। ’

মাঝেমধ্যেই দেয়াল চাপায় দুর্ঘটনার খবর মেলে। এ ধরনের খবর শুনেও এই আবাসনে থাকেন মতিঝিলের আরামবাগের নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী সাগর। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের রুমে থাকি ৩ জন। অন্য বাসার তুলনায় এখানকার ভাড়া অনেক অল্প। ৩৯০০ টাকা ভাড়া দিতে হয়। প্রতিজন ১৩০০ টাকা করে। এই কম ভাড়ায় অন্য কোথাও বাসা পাওয়া যাবে না বলে ঝুঁকি নিয়েই থাকতে হচ্ছে এখানে। টিনশেড বাড়িটির পানির হাউসেও দেখা দিয়েছে ফাটল।  ছবি: সুমন শেখঝুঁকির বিষয়ে তিনি বলেন, যে কোনো সময় একটা দুর্ঘটনা হয়ে যেতে পারে। আপাতত কিছু করার নেই। তবে যত তাড়াতাড়ি পারি এখান থেকে কেটে পড়তে হবে।

এখানকার আরেক বাসিন্দা চাকরিজীবী রিপন বলেন, ব্যাচেলরদের এমনিতেই বাসা ভাড়া পাওয়া কঠিন। এরওপর স্বল্প ভাড়া তো কল্পনা করাও দুরূহ। সেজন্য বাধ্য হয়েই এমন অনিরাপদ বাসায় থাকতে হচ্ছে।  

এই বাড়ির তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্বে রয়েছেন মিলন। তিনি বাংলানিউজকে জানান, বাসিন্দাদের কেউ বাসা ছাড়ছেন না বলে কাজ ধরা যাচ্ছে না।  

দেয়াল চাপায় দুর্ঘটনার খবর প্রায়ই শোনা যায়, তবু এই বাড়িটিতে থাকছেন বাসিন্দারা।  ছবি: সুমন শেখমিলন নিজেই ভয়ে ভয়ে থাকেন জানিয়ে বলেন, এই বাসায় থাকি, সত্যি বলতে থাকতে থাকতে সইয়া গেছে। আমি এখনও বিয়ে করি নাই। বাবা-মা গ্রামে থাকেন। আমিই শুধু ঢাকায় থাকি। মাঝে-মাঝে আমারো ভয় করে। তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই বাড়ি ভেঙে ফেলবো।

ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙে ফেলা হবে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিষয়টি আগে দেখছি আমরা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৭
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।