ঢাকা, বুধবার, ২১ মাঘ ১৪৩১, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

তনু হত্যার এক বছর

শনাক্ত হয়নি খুনি, হতাশ পরিবার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫১ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৭
শনাক্ত হয়নি খুনি, হতাশ পরিবার তনু হত্যার এক বছর: শনাক্ত হয়নি খুনি, হতাশ পরিবার-ছবি: বাংলানিউজ

কুমিল্লা: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যার এক বছরেও খুনিকে শনাক্ত করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

এক বছর আগে এই দিনে (২০ মার্চ) খুন হন তনু। এতোদিনেও মামলার কোনো অগ্রগতি করতে পারেনি তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি।

এ নিয়ে হতাশা বিরাজ করছে তনুর পরিবারে।

মুরাদনগরের গ্রামের বাড়িতে মেয়ের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করছে পরিবার। তনুর মা আনোয়ারা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, এতোদিনেও হত্যাকারীকে শনাক্ত করে বিচারের মুখোমুখি করা গেলো না। মনে হয়, সরকারের চেয়ে হত্যাকারীর ক্ষমতা বেশি। তাই বিচার পাই না। তাই আমি পরিবার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে চাই। তার কাছে আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাইবো।

তনুর বাবা ইয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, দিনরাত আমার মেয়ের কথা মনে পড়ে। এক বছর ধরে তার মুখে বাবা ডাক শুনতে পাই না। আমি বিচার চাই। অনেকে আমাকে চাকরির ভয় দেখায়। চাকরি দিয়ে কি করবো। আমি এখন বিচার চাই। এক বছর ধরে আমরা তনু ছাড়া কীভাবে বেঁচে আছি, একমাত্র আল্লাহ জানেন। আমি আল্লাহর কাছে বিচার দেওয়া ছাড়া আর কিছু বলতে পারছি না।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা সেনানিবাসের বাসার পাশের একটি জঙ্গল থেকে তনুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ২১ মার্চ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে তার প্রথম ময়নাতদন্ত করেন ডা. শারমিন সুলতানা। ওইদিন অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন তনুর বাবা ইয়ার হোসেন। তিনি ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড অফিস সহায়ক। মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় কুমিল্লার ডিবি পুলিশকে। তদন্তের স্বার্থে কুমিল্লা ডিবি পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে ৩০ মার্চ দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্তের জন্য তনুর মরদেহ জেলার মুরাদনগরের মির্জাপুর গ্রামের কবর থেকে উত্তোলন করে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপর মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় কুমিল্লা সিআইডিতে।

৪ এপ্রিল প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ওই প্রতিবেদনে তনুকে হত্যা ও ধর্ষণের আলামত নেই উল্লেখ করায় সমালোচনার মুখে পড়ে ফরেনসিক বিভাগ।

১৬ মে তনুর কাপড়ে তিন পুরুষের শুক্রাণু পাওয়ার খবর প্রকাশ করে সিআইডি।

১২ জুন দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ওই প্রতিবেদনে তনুর যৌন সম্পর্কের বিষয়ে আলামত পাওয়া গেছে বলে দাবি করা হয়। তবে ধর্ষণ ও হত্যার বিষয়টি এবারও অস্পষ্টই রেখে দেয় ফরেনসিক বিভাগ। দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে তনুর পরিবারসহ বিভিন্ন মহলে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তনুর পরিবার প্রথম ময়নাতদন্তের মতো দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনও প্রত্যাখ্যান করে। এরপর আরো প্রায় তিন মাস কেটে গেলো, কোনো অগ্রগতি নেই বললেই চলে। পরে ২৪ আগস্ট তদন্ত কর্মকর্তা গাজী ইব্রাহীমকে পরিবর্তন করে সিআইডির এডিশনাল এসপি জালাল উদ্দিনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। মামলায় এ পর্যন্ত তিনবার তদন্তকারী কর্মকর্তা বদল করা হয়েছে। তবে এক বছরেও কোনো আলোর মুখ দেখেনি তনুর পরিবার।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৯ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৭
আরবি/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।