বুধবার (২৯ মার্চ) বিকেলে ফরিদপুর শহরের রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে আয়োজিত জনসভায় এ অভিযোগ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাত্র তিন বছরে জাতির পিতা অর্থনৈতিক মুক্তির পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যান।
তিনি বলেন, কিন্তু বিএনপি জামায়াত ক্ষমতায় এসে মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। তাদের রাজনীতি হলো পেট্রোল বোমা দিয়ে মানুষ পোড়ানো। এয়ার কন্ডিশন রুমে বসে থালেদা জিয়া হুকম দেয়। আর বিএনপি জামায়াত মানুষকে পেট্রোল বোমা দিয়ে পুড়িয়ে মারে।
বিএনপি জামায়াত জোটের সন্ত্রাসের হাত থেকে এমনকি অন্তঃসত্ত্বা নারীরাও রক্ষা পায়নি। তাদের পেট্রোল বোমার হাত থেকে রক্ষা পায়নি কোমলমতি শিশু এবং শিক্ষকরাও।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ মানেই উন্নয়ন, আওয়ামী লীগ মানের দেশের সাধারণ মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় সারের জন্য ১৮ জন কৃষককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে বলেন, গরীবের বন্ধু আওয়ামী লীগ। গরিবদের জন্য আওয়ামী লীগ কাজ করে যাচ্ছে। আমরা ১০ টাকায় ব্যাংক একাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করেছি।
বুধবার (২৯ মার্চ) দুপুর সোয়া তিনটার দিকে জনসভাস্থল সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের শহর শাখার মাঠে পৌঁছে নৌকা আকৃতির বিশাল জনসভা মঞ্চে আসন নেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। এ সময় সুইচ টিপে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করার পাশাপাশি নতুন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি।
বিকেল সোয়া চারটার দিকে বক্তব্য শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় ফরিদপুরবাসীকে অবহেলিত ও বঞ্চিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজ আপনাদের জন্য আমি অনেক উপহার নিয়ে এসেছি। এ সময় তিনি ফরিদপুরের জন্য ১৯টি প্রকল্পের উদ্বোধনের কথা একে একে উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, শুধু এখানেই শেষ নয়, আমি আরও বেশ কিছু প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করে গেলাম। এগুলোর কিছু শুরু হয়ে গেছে। বাকিগুলোর কাজ খুব শিগগিরই বাস্তবায়ন হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের কাজই হলো ক্ষমতায় থেকে লুটপাট করা। এ সময় বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের বিভিন্ন দুর্নীতি ও লুটপাটের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান যখন মারা যায় তখন বলা হয়েছিলো ভাঙা স্যুটকেস এবং ছেড়া গেঞ্জির কথা। কিন্তু পরে সেই ভাঙা স্যুটকেস থেকে কিভাবে এত লঞ্চ এত ইন্ডাস্ট্রি বের হলো? উপস্থিত জনতার প্রতি প্রশ্ন রাখেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী এমপি, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এমপি, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এমপি, ডা. দীপু মনি এমপি ও আবদুর রহমান এমপি, বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল প্রমুখ।
বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে হেলিকপ্টারযোগে ফরিদপুর শহরের শেখ জামাল স্টেডিয়ামে অবতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তাকে স্বাগত জানান স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া ও পুলিশ সুপার সুভাষ চন্দ্র সাহা।
স্টেডিয়াম থেকে সার্কিট হাউসে গেলে প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার দেয় পুলিশের একটি দল। সার্কিট হাউসে বিশ্রাম নিয়ে বেলা সোয়া বারোটার দিকে মেয়ে পুতুলের শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশে রওনা হন তিনি।
ফরিদপুর ছাড়াও রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুরসহ আশপাশের জেলা থেকে আসা নেতাকর্মী ও সমর্থকরা অবস্থান নিয়েছেন জনসভাস্থলে। মানুষের ভিড়ে জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে রাজেন্দ্র কলেজ মাঠ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৭/আপডেট ১৭১০ ঘণ্টা
এমইউএম/আরকেবি/এএসআর/আরআই