ঢাকা, শুক্রবার, ২৩ মাঘ ১৪৩১, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা দ্রুত দেওয়ার নির্দেশ মন্ত্রীর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০৮ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৭
ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা দ্রুত দেওয়ার নির্দেশ মন্ত্রীর

রাজধানীর কুড়িল-পূর্বাচল রাস্তার দুই পাশে ১০০ ফুট প্রশস্ত খাল খনন ও উন্নয়ন প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্তদের কোনো ধরনের হয়রানি ছাড়া টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।

তিনি বলেন, খালের জন্য যাদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে তাদের টাকা দ্রুত পরিশোধ করতে হবে। এছাড়া এই টাকা পরিশোধে ক্ষতিগ্রস্তদের কোনোভাবেই হয়রানি করা যাবে না।

মধ্যস্বত্বভোগীদেরও ফায়দা লোটার সুযোগ দেওয়া যাবে না।

বুধবার (২৯ মার্চ) রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল উপশহর প্রকল্পের ১৪ নম্বর সেক্টরে ‘কুড়িল-পূর্বাচল লিংক রোডের উভয় পাশে কুড়িল থেকে বালু নদী পর্যন্ত ১০০ ফুট চওড়া খাল খনন ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের অবহিতকরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

পূর্তসচিব শহীদ উল্লা খন্দকারের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হক, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার ইন চিফ মেজর জেনারেল ছিদ্দিকুর রহমান, রাজউক চেয়ারম্যান এম বজলুল করিম চৌধুরী, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আরিফ উর রহমান, রাজউকের সদস্য (উন্নয়ন) আব্দুর রহমান, ঢাকার জেলা প্রশাসক মো. সালাউদ্দিন, সেনাবাহিনীর প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল নিজাম উদ্দিন আহমদ প্রমুখ।

পূর্তমন্ত্রী বলেন, পূর্বাচলে একটি আধুনিক ও স্মার্ট সিটি করার সব কাজ চলমান। আমরা কমন ইউটিলিটি টানেলের মাধ্যমে সব সার্ভিস লাইন সংযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। পূর্বাচল ৩০০ ফুট সড়কের পাশে খাল খনন হলে অনেক দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ তৈরি হবে। ঢাকার জলাবদ্ধতা কমাতে এই খাল বিশেষ ভূমিকা রাখবে। এটি কুড়িল থেকে বালু নদীতে গিয়ে মিশবে। বাউনিয়া খাল খননের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশনের আরও ব্যবস্থা করা হবে। ঢাকার অনেক খাল দখল হয়ে গেছে।

অনুষ্ঠানে মেয়র আনিসুল হক বলেন, ডিএনসিসি এলাকায় একটি নান্দনিক খাল হতে যাচ্ছে। এটি কুড়িল রেলওয়ে ও কুড়িল ফ্লাইওভারের নিচ পর্যন্ত সংযুক্ত করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। যাদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে তাদের ক্ষতিপূরণ অবশ্যই দিতে হবে। ক্ষতিপূরণের অর্থ দ্রুত প্রদানের লক্ষ্যে প্রকল্প এলাকায় একটি সাইট অফিস করার ব্যবস্থা করা হবে।

অতিথিদের বক্তব্য পর্বের পর উপস্থিত জনতা দাঁড়িয়ে বিভিন্ন দাবি জানাতে শুরু করেন। এ সময় তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে চেক পেতে নিজেদের নানা দুর্ভোগের কথা জানান। এ সময় পূর্তমন্ত্রী ও মেয়র স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বক্তব্য দেওয়ার আহ্বান জানান।

ডিএনসিসির ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ডা. জিন্নাত আলী বলেন, এ এলাকার বাসিন্দারা পর পর তিনবার জমি অধিগ্রহণের শিকার হয়েছে। তারা আজ অনেকটাই নিঃস্ব। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করার মতো অবস্থাও অনেকের নেই। তাদের টাকা পেতে যাতে কোনো হয়রানি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এ জন্য আমরা প্রকল্প এলাকায় একটি অফিস স্থাপন করে ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।

ডুমনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শরীফুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, এই এলাকায় প্রথমে ৩০০ ফুট রাস্তার জন্য আমাদের লোকজনের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এখন আবার খালের জন্য অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। আমরা সরকারের উন্নয়নের বিষয়ে আপত্তি করছি না। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা পেতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। তাই গণপূর্তমন্ত্রী ও মেয়রের কাছে আবেদন, হয়রানি ছাড়া আমাদের ক্ষতিপূরণের অর্থ পাওয়ার ব্যবস্থা করুন।

প্রকল্প সূত্র জানায়, পূর্বাচল ৩০০ ফুট সড়কের উভয় পাশে ১০০ ফুট প্রশস্ত খাল খননের জন্য ২০১৫ সালের ২২ সেপ্টেম্বর একনেক সভায় প্রকল্প অনুমোদন হয়। এই প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় পাঁচ হাজার ২৮৬ কোটি ৯১ লাখ টাকা। প্রকল্পের অধীনে ১৩ দশমিক ৬৪ কিলোমিটার লেক, ১৩ কিলোমিটার সার্ভিস রোড, ৩৯ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে, চারটি ইউলুপ, খালের ওপর ১৩টি আর্চব্রিজ, ১৬টি পেডিস্ট্রিয়ান ব্রিজ, ১২ দশমিক ৯১ কিলোমিটার বাউন্ডারি ওয়াল ও পাঁচটি স্লুইস গেট নির্মাণ করা হবে। এ জন্য প্রকল্প এলাকায় প্রায় ৯০ দশমিক ১৫৪ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। রাজউকের তত্ত্বাবধানে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী (এসডাব্লিউ-পশ্চিম)।

বাংলাদেশ সময়: ০৮০৫ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৭
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।