ঢাকা, শুক্রবার, ২৪ মাঘ ১৪৩১, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

সুন্দরবনে বিজিবি’র দু’টি ভাসমান বিওপি

শেখ জাহাঙ্গীর আলম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০১৭
সুন্দরবনে বিজিবি’র দু’টি ভাসমান বিওপি সুন্দরবনে বিজিবি’র দু’টি ভাসমান বিওপি-ছবি-বাংলানিউজ

সুন্দরবন, আঠারোবেকী থেকে ফিরে: সুন্দরবনের সীমান্তবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকার সুরক্ষায় দুটি ভাসমান বর্ডার অবজারভেশন পোস্ট (বিওপি) স্থাপন করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। 

সীমান্তে দুটি ভাসমান বিওপি চালু করার ফলে সুন্দরবনের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অরক্ষিত ৩৮ কিলোমিটার এলাকায় বিজিবি সদস্যরা নজরদারি করতে পারবেন।  

এতে বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকায় চোরাচালান ও জলসদ্যুতা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে বিজিবি।

 

সুন্দরবনের বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের বয়শিং থেকে হাড়িভাঙ্গা খাল, দক্ষিণ তালপট্টি খাল পর্যন্ত ৭৪ কিলোমিটার সীমানা সুরক্ষিত করতে এর পাশাপাশি আরও দু’টো বিওপি স্থাপনের পরিকল্পনাও রয়েছে বিজিবি’র।  

সুন্দরবনে বিজিবি’র দু’টি ভাসমান বিওপি-ছবি-বাংলানিউজবিজিবি’র নীলডুমুর রিভারাইন বর্ডার গার্ড কোম্পানির অধিনায়ক (সিও) বাংলানিউজকে বলেন, বয়শিং খাল থেকে দক্ষিণ তালপট্টি খাল পর্যবন্ত সীমানা বেড়ে যাওয়ার কারণে আরও দুটো ভাসমান বিওপি স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে একটি বয়শিং খালে ও অপরটি ডাইকিং খালে।  

এই দুটো বিওপি স্থাপন করা হলে সুন্দরবনের এই অঞ্চলের সীমান্ত অরক্ষিত থাকবে না বলেও জানান তিনি।  

এদিকে সাতক্ষীরা অঞ্চলে সুন্দরবনের নীলডুমুর বিজিবি ব্যাটালিয়ন থেকে খোলপেটোয়া নদীপথে ৬০ কিলোমিটার দূরে স্থাপন করা হয়েছে ভাসমান দুটি বিওপি। প্রথম ভাসমান বিওপি-১ রয়েছে নীলডুমুরের কাঁচিকাটা খালে এবং দ্বিতীয় ভাসমান বিওপি-২ স্থান করা হয়েছে সুন্দরবনের আঠারোবেকী খালে। কাঁচিকাটা বিওপি থেকে আঠারোবেকী বিওপির দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার।  

এখানে প্রায় ৩৬ কিলোমিটার সীমানা জুড়ে রয়েছে সুন্দরবন রিজার্ভ ফরেস্ট (অভয়ারণ্য)। প্রয়োজনে সেখানে বোর্ট পেট্রোলিংয়ের মাধ্যমে বিজিবি টহল দিতে পারবে।

খুলনা শিপইয়ার্ড ও নৌ-বাহিনীর তত্ত্বাবধানে বিজিবি’র এই ভাসমান বিওপিগুলো তৈরি করা হয়েছে।

 সুন্দরবনে বিজিবি’র দু’টি ভাসমান বিওপি-ছবি-বাংলানিউজসরেজমিনে দেখা যায়, বিওপির চারপাশে রয়েছে চারটি পোস্ট। যেখানে অস্ত্র নিয়ে টার্গেট পয়েন্টে নজরদারি করবে বিজিবি’র সদস্যরা। এই বিওপি’র নির্ধারিত এলাকায় পেট্রোলিংয়ের জন্য রাখা হচ্ছে বোট ও হাই স্পিড বোট। বিজিবি’র দুইজন অফিসারসহ মোট ৩৫ জন থাকবেন এই বিওপিতে। দিনে রাতে শিফট ভাগ করে দায়িত্ব পালন করবে বিজিবি’র সদস্যরা। এই বিওপির দায়িত্বে থাকা সদস্যদের জন্য রয়েছে থাকা-খাওয়ার সুব্যবস্থা ও পর্যাপ্ত টয়লেট। বিওপি’র ছাদের অংশে রয়েছে খালি জায়গা, সেখানে বিজিবি সদস্যদের দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার সকলকে সমবেত করতে পারবেন। লোহার তৈরি এই ভাসমান বিওপির নিচতলায় রয়েছে স্টোর রুম। নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য থাকছে ওয্যারলেস ট্রান্সমিশনের ব্যবস্থা। অস্ত্র ও গোলাবারুদ রাখার জন্যে এতে একটি অস্ত্রাগারও আছে।

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, ভাসমান বিওপিতে দায়িত্ব পালনের জন্য একটি টিম থাকে। একমাস পরপর সেখানে সদস্যদের পরিবর্তন করে দায়িত্বে রাখা হয়।  

এদিকে, চারপাশে সুন্দরবন থাকার কারণে বিওপির চারপাশেই রয়েছে কাঁটাতারের একটি বেড়া। যেন কোনো বন্য পশু এই বিওপির কোনো সদস্যের ওপর হামলা করতে না পারে।  

সুন্দরবনে বিজিবি’র দু’টি ভাসমান বিওপি-ছবি-বাংলানিউজসুন্দরবনের সুরক্ষায় নিশ্চিত করতে এবং সীমান্তে চোরাচালান ও জলদস্যুদের প্রতিরোধ করতে স্থাপনকৃত এই ভাসমান দু’টি বিওপি নীলডুমুর রিভারাইন বর্ডার গার্ড কোম্পানীর অধীনেই পরিচালিত হবে বলে জানিয়েছে বিজিবি।

সুন্দরবন সীমান্ত এলাকায় উভয় দেশের যৌথ পেট্রোলিংয়ের বিষয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন বলেন, দুই দেশের বর্ডার ম্যানেজমেন্টের একটা অংশ যৌথ পেট্রোলিং। এই যৌথ পেট্রোলিং দেশের অন্যান্য সীমান্তগুলোতেও হচ্ছে। এখানেও করা হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৩৪৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০১৭
এসজেএ/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।